Declaration of CCC & YES Convention 2012

Published: 02 June 2012

সনাক ও ইয়েস জাতীয় সম্মেলন ২০১২

১-২ জুন ২০১২, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা

সম্মেলনের ঘোষণা

আমরা টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ইয়েস এর জাতীয় সম্মেলন ২০১২ থেকে ঘোষণা করছি যে, আমরা দুর্নীতিকে সর্বান্তকরণে ঘৃণা করি।ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে দুর্নীতি থেকে বিরত থেকে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান অনুযায়ী একক ও সমষ্টিগতভাবে দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি এবং করবো। আমরা স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণে প্রিয় মাতৃভূমিতে গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ করার লক্ষ্যে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার সঙ্গে সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করতে সচেষ্ট থাকবো।

জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য আমাদের রয়েছে এক হার না-মানা সংগ্রামের ইতিহাস। মানুষের মুক্তির এই সংগ্রামে মৃত্যু ভয়কে তুচ্ছ করে, আত্মত্যাগ ও বীরত্বের অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে বাংলার বীর সন্তানেরা।মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে সততা, স্বচ্ছতা, সমতা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার মাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্যসহ সকল প্রকার শোষণ ও বৈষম্য অবসানের লক্ষ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে গণতন্ত্র ও সুশাসনের স্বার্থে, বিশেষ করে, কার্যকরভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

চাই ন্যায্যতা, সুশাসিত ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ

আমরা চাই দুর্নীতির বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলে প্রতিষ্ঠিত হোক ন্যায়ভিত্তিক, সুশাসিত ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, সুশাসন এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ বা অন্য যেকোন পরিচয় নির্বিশেষে সকল মানুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা সকল আদিবাসী, প্রতিবন্ধী এবং অন্যভাবে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করি।

গণতন্ত্রকে সুসংহত ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য অপরিহার্য সরকার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ। বিকেন্দ্রীভূত প্রশাসন ও দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। ভূমি প্রশাসনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকল্পে উদ্যোগ গ্রহণসহ পাহাড়ী ও সমতল অঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় উদ্যোগ চাই।জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যবহারযোগ্য সকল তহবিলের এবং এর মাধ্যমে বাস্তবায়নরত সকল প্রকল্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সকল পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।এ প্রসঙ্গে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আইসিটি ও ই-গভর্নেন্স চালু করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জোর সুপারিশ করছি।

দুর্নীতি দমনে চাই প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা

দুর্নীতি প্রতিরোধ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। আমরা দেশে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমকে দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর করার জন্য সরকার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নাগরিক সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।বিশেষ করে, রাজনৈতিক দলসমূহের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক অঙ্গীকারের কার্যকর বাস্তবায়ন দাবি করছি।দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে তথ্য অধিকার আইন ও হুইসেল ব্লোয়ার প্রোটেকশন আইন পাশে আমরা সরকারকে অভিনন্দন জানাই। একইসাথে স্বাধীন, নিরপেক্ষ, দক্ষ ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন যাতে দুর্নীতি রোধে সক্রিয় ও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করার দাবি করছি। দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকরভাবে কর্ম পরিচালনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোন পদক্ষেপ ও আইনী সংস্কার সাধন থেকে বিরত থাকার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। সেইসাথে দুর্নীতির মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির স্বার্থে বিচারালয়ের আলাদা বেঞ্চ গঠন করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি, জনগণের মানবাধিকার নিশ্চিত এবং সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ক্রয় প্রক্রিয়ায় চাই স্বচ্ছতা, জাতীয় সম্পদে ব্যবহারে চাই জবাবদিহিতা

সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ এবং বাংলাদেশ রেলওয়েতে নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রমে দুর্নীতি ও অনিয়মের যে ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য। অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ দেশের ভূমি-সম্পদ, সুন্দরবনের মত সকল সংরক্ষিত বনাঞ্চল, এবং বিশেষ করে, তেল- গ্যাসসহ সকল প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের সাথে সম্পৃক্ত ক্রয় প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

প্রতিষ্ঠিত হোক তথ্যের অধিকার, অবাধ তথ্য প্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা

জনগণের তথ্য অধিকার দুর্নীতি প্রতিরোধে অন্যতম সহায়ক হাতিয়ার। অবাধ তথ্য প্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও সুশাসনের পূর্বশর্ত। তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের পথে বিরাজমান সকল প্রতিকূলতা উত্তরণে বিশেষ করে গণমাধ্যমসহ মত ও তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত সকলের নিরাপত্তা বিধানকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ উদ্যোগী ভূমিকা পালনের জন্য আমরা সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। গণমাধ্যম কর্মীরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে কোন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন না হয়ে জনগণের কাছে যেন সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে পারে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের ও জনপ্রতিনিধিদের। সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হত্যা এবং হামলায় আমরা শঙ্কিত।

চাই আইনের শাসন, সুশৃঙ্খল ও দক্ষ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

হত্যা, গুমের মত জঘণ্য অপরাধ দমনসহ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উনড়বয়নে আরও সচেষ্ট হওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি। পুলিশ ও র‍্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মানুষের ওপর নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, ক্রসসফায়ার, গুম ইত্যাদি অনতিবিলম্বে বন্ধ করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এ সকল বাহিনীতে পেশাদারিত্ব ও দলীয় রাজনৈতিক অন্য সকল প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালনের পরিবেশ ও মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে।

ব্যবসা-বাণিজ্যে কালো টাকা ও সিন্ডিকেটের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে এবং পুঁজিবাজারে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আমরা সরকারের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছি। সেইসাথে সংবিধান ও নির্বাচনী অঙ্গীকার পরিপন্থী কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সৃষ্টিকারী সকল উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চাই। ক্ষমতাবানদের ছত্রছায়ায় ক্রমবর্ধমান চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সকল শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে কারো প্রতি দয়া বা করুণা হবে আত্মঘাতীমূলক।

স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে চাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা

দুর্নীতি রোধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে গঠিত হয়েছে নবম জাতীয় সংসদ। নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী মুষ্টিমেয় কিছু ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ গৃহীত হলেও অঙ্গীকার ও প্রত্যাশার তুলনায় প্রাপ্তি খুবই নগণ্য। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি যার অন্যতম উদ্যোগ মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব প্রকাশ করা। জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা, সততা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় তাদের সম্পদের পূর্ণ হিসাব প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছি। সেইসাথে নির্বাচনী অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দৃঢ় ও শক্তিশালী করতে এবং সর্বোপরি দেশের সার্বিক কল্যাণে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের প্রতি সহনশীল ও একে অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। সেইজন্য রাজনৈতিক সংঘাতের পথ পরিহার করে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যা উত্তরণে উপায় নির্ধারণ করতে আমরা সরকারসহ সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে সরকারকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা এবং সংসদকে কার্যকর করার লক্ষ্যে নিজেদের নির্বাচনী অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বিরোধী দলকে বয়কটের রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে সংসদে যোগদানের দাবি করছি।

বাস্তবায়ন হোক জনগণের মৌলিক অধিকার

জনগণের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বিশেষ করে, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা লাভের অধিকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের মাধ্যমে ও এই মৌলিক সেবা খাতে বার্ষিক বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে শিক্ষাঙ্গনে সকল প্রকার সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য কঠোর হাতে দমন করে সুস্থধারার শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দেশের তরুণ সমাজ অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অন্যতম সঞ্চালক। শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তিক যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি তরুণের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। আমরা সরকারকে দেশে বেকারত্ব দূরীকরণকল্পে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনকে করেছে অসহনীয়। এখানে সিন্ডিকেটের প্রভাব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামকে নাগালের বাইরে নিয়ে গেছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার মাধ্যমে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের আয়ত্বের মধ্যে রাখার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা সরকারের কাছে জোর আবেদন জানাচ্ছি। একইভাবে, অনিয়ন্ত্রিত ও আশঙ্কাজনকভাবে খাদ্যদ্রব্য ও ঔষধে ভেজাল মিশ্রণ জনগণের স্বাস্থ্য, জীবন ও জীবনমানকে ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। দেশের মানুষের, বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই ভেজাল নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জোর দাবি করছি।

যোগাযোগ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় চাই কঠোর, কার্যকর ও তড়িৎ উদ্যোগ

সাম্প্রতিককালে অব্যাহত সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানিতে আমরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা বর্তমানে বহুল আলোচিত একটি বিষয়। বিশেষ করে সারাদেশের মহাসড়ক এখন মানুষের মৃত্যুফাঁদ। মানুষের মূল্যবান জীবন রক্ষা এবং দেশের অর্থনৈতিক উনড়বয়ন ত্বরান্বিত করার স্বার্থে এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা আরও দাবি করছি, সরকার যেন বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা দূর এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে অনিয়ম কঠোরভাবে রোধ করাসহ যোগাযোগ খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। একই সাথে সাধারণ মানুষের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম রেলওয়ে সেবাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে একে সমপ্রসারণ, সেবামুখী করা এবং টিকেট কালোবাজারী, রেলওয়ে সম্পদ বেদখল রোধ সহ এই খাতে দুর্নীতিরোধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জোর দাবি করছি।

চাই নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার কার্যকর উদ্যোগ

দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন এবং নারী অধিকার আন্দোলন একসূত্রে গাঁথা। আমরা এই সম্মেলনের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য জাতীয় বাজেট ও উনড়বয়ন প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে নারী সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা সিডও সনদের পূর্ণ অনুমোদন এবং জাতীয় নারী নীতির আলোকে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন প্রণয়ন এবং এই নারী নীতির কার্যকর বাস্তবায়ন চাই।

কার্যকর হোক বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও যুদ্ধাপরাধীদের সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার যুদ্ধাপরাধের বিচারকার্য সুষ্ঠু ও দ্রুততার সাথে সম্পনড়ব করার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে দ্বান্দ্বিক রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি অন্য সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারকে অনুরোধ করছি। আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন চাই।

আমরা দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর করার জন্য সরকার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি একযোগে সোচ্চার, সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।