জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন নেটওয়ার্ক (সিএফজিএন)

প্রকাশকাল: ০৯ মার্চ ২০১৩

সমঝোতা স্মারক

জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন নেটওয়ার্ক (সিএফজিএন)

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকির সম্মুখীন দেশসমূহের মধেঞ্জন্যতম বাংলাদেশ যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা ১৮(ক) অনুসারে, “বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের নাগরিকল্ডে জন্য পরিবেশ সুরক্ষা ও উন্নয়ন করা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভুমি, বন এবং বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। এরই আলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (National Adaptation Plan of Action - NAPA) ও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশলপত্র ও কর্মপরিকল্পনা-২০০৯ (Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan - BCCSAP) প্রণয়ন করেছে। পৃথিবীর অন্যান্য উন্নয়নশীল, বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের ন্যায় জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশসমূহের নিকট থেকে বাংলাদেশেরও সহজ ও অর্থপূর্ণ উপায়ে “নতুন ও অতিরিক্ত তহবিল প্রাপ্তির অধিকার রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ইতোমধেল্টাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল আইন ২০০৯ প্রণয়ন করেছে। অন্যদিকে রাজস্ব তহবিল থেকে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। একইসাথে উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন রেজিলিয়েন্স তহবিল (Climate Change Resilience Fund) গঠন করা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সূত্র থেকে বাংলাদেশের ন্যায্য প্রাপঞ্জর্থপ্রবাহ নিশ্চিত করা যেরূপ জাতীয় প্রাধান্য, তেমনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত অর্থব্যয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা তথা সার্বিকভাবে সুশাসন নিশ্চিত করাও সমভাবে অপরিহার্য। জলবায়ু তহবিল বল্টস্থাপনা ও বল্টহারে স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীসহ সকল স্টেকহোল্ডারল্ডে অংশগ্রহণমূলক সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে একদিকে যেমন এ তহবিলের মূল লক্ষদ্দ উদ্দেশ্য পূরণ কঠিন হবে তেমনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সূত্র থেকে অর্থপ্রবাহের সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ প্রেক্ষিতে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ('Strengthening Transparency, Accountability and Integrity in Climate Finance Governance-CFG') নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশসমূহ হচ্ছে কেনিয়া, মালদ্বীপ, মেক্সিকো, পেরু এবং ডোমিনিকান রিপাবলিক। এই বহুদেশীয় প্রকল্পের মূল কার্যক্রম ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর সচিবালয় এর সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে।

এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারল্ডে সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাল্ডে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা, জলবায়ু অর্থায়ন নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখা এবং সহযোগিতা করা, জলবায়ু অর্থায়ন তহবিলে অর্থের প্রবাহ ও বল্টহারে স্বচ্ছতা, সমতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নীতি উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে দিক নির্দেশনা প্রদান করা এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক স্টেকহোল্ডারল্ডে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব লাঘব করার প্রচেষ্টা  জোরদার করা।

প্রকল্পের উদ্দেশ্যসমূহ সফল করার লক্ষ্যে টিআইবির উদ্যোগে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, সুশাসন এবং অধিকারভিত্তিক অংশগ্রহণ সর্ম্পকিত বিষয়ে কর্মরত বা আগ্রহী বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিল্ডে নিয়ে ‘জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন নেটওয়ার্ক (সিএফজিএন) ’ গঠন করা হয়েছে।

ক্লিক করুন