Collective actions emphasised to overcome governance challenges in District and Upazila health services (Bangla)

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিত প্রয়াসের উপর গুরুত্বারোপ

ঢাকা, ৩ জুলাই ২০১৩:সকলের জন্য উন্নত ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র আয়োজনে আজ রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘স্বাস্থ্যসেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অভিজ্ঞতা-ভিত্তিক দিনব্যাপী এক পরামর্শ সভার সমাপনী পর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং দিনব্যাপী দলীয় আলোচনার সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. সাইদুর রহমান এবং ফরিদপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. সিরাজুল হক তালুকদার। অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী বর্তমান সরকার জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, পুষ্টি, শিশু ও মাতৃমঙ্গল নিশ্চিত করা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ আরো অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিগত চার বছরে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী ও কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ডাক্তার এবং বিভিন্ন পর্যায়ের যে সকল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়েছেন তাদেরকে অনুরোধ জানাব স্থানীয় পর্যায়ে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে জনগণ যেসকল হয়রানীর সম্মুখীন হন তার ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং জনগণের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদাপূরণের উদ্যোগ নেবেন।”

উল্লেখ্য, দেশের ৪৫টি অঞ্চলে টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এবং ইয়ূথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) এর সদস্যরা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বেইস লাইন জরীপ, রিপোর্ট কার্ড জরীপ, জাতীয় খানা জরীপের অধীনে স্বাস্থ্য খাতের উপর জরীপ, ভ্রাম্যমাণ তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক কার্যক্রম, নাগরিকের মুখোমুখি, নাগরিক সনদ এবং সততার অঙ্গীকারসহ বিভিন্ন সামাজিক জবাবদিহিতা কৌশল ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। এই পরামর্শ সভায় সনাকের স্বাস্থ্য উপ-কমিটির সভাপতি ও প্রতিনিধি ছাড়াও ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৩৪টি জেলা সদর হাসপাতাল/জেনারেল হাসপাতাল এবং ৩টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪৪ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা ৬টি দলে বিভক্ত হয়ে দিনব্যাপী দলীয় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে উদ্বোধনী পর্বে জেলা ও উপজেলা থেকে তথ্যের ভিত্তিতে প্রণীত একটি উপস্থাপনা পরিবেশন করেন টিআইবি’র গবেষণা কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণও সমাপনী পর্বে অংশগ্রহণ করেন।

টিআইবি পরিচালিত মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় দেখা যায়, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেবা নেওয়ার সময় সাধারণ জনগণ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। সীমিত অবকাঠামো ও জনবল, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ ছাড়াও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, সেবা বিষয়ক তথ্যের সরবরাহ-সংরক্ষণ-সমন্বয়, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ, মনিটরিং ও অডিট, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটির ভূমিকার ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে। স্থানীয় ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কার্যকর সমম্বয়ের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে সভায় অংশগ্রহণকারীবৃন্দ অভিমত ব্যক্ত করেন। দলীয় আলোচনা থেকে নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ে বিবেচনার জন্য ডাক্তারদের উপস্থিতি, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি, আর্থিক বরাদ্দ, রোগীদের সেবা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় যেমন: ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, কমিউনিটির অংশগ্রহণ, তথ্য সরবরাহ ও সংরক্ষণ এবং মনিটরিং ও অডিট ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশসমূহ উত্থাপন করা হয়।

Media Contact 


Press Release