ন্যায্য দাবি পর্যালোচনা করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার তাগিদ
ঢাকা ২৯ আগস্ট ২০১৯: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম-এ কথিত অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী জীববৈচিত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ ‘অপরিকল্পিত উন্নয়ন’ কার্যকম বিষয়ে স্বচ্ছতার ঘাটতি দূরীকরণ ও উত্থাপিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রাবাস নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্থান নির্ধারণ, গাছ অপসারণ, উন্নয়নকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংঘটনের সাথে অনৈতিক লেনদেনের ভাগবাটোয়ারাসহ গুরুতর অনিয়ম, স্বচ্ছতার ঘাটতি ও দুর্নীতির অভিযোগের দ্রæত বিচারের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী আশানুরূপ জবাাব দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
আজ এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। সকল উন্নয়ন কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকারীর দায়িত্ব অর্পিত রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে জাবি’তে উন্নয়ন কার্যক্রমের দুর্নীতি বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তাদের নৈতিক অধিকার এবং এ বিষয়ে তাদেল সকল জিজ্ঞাস্য ও দাবিসমূহ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করতে পারা অনভিপ্রেত ও বিব্রতকর। অপরদিকে ন্যায্য দাবির পক্ষে শিক্ষক-শিক্ষাথীদের দাঁনা বেধে উঠা আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গতভাবে সমাধানে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে। উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য কেন যথাসময়ে উন্মুক্ত করা হয়নি, তা-ও প্রশ্নসাপেক্ষ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের দাবিসমূহ পর্যালোচনায় ক্রমাগত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলছে যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা। এ পর্যায়ে কর্তৃপক্ষের উচিত অনতিবিলম্বে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়ে জবাবদিহিতা ব্যবস্থার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং একই সাথে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত পরিস্থিতিকে আর বাড়তে না দেয়া।”
ড. জামান আরো বলেন, ‘‘আন্দোলনে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ গাছ কেটে ফেলা, উন্নয়নকাজের ‘মাস্টার প্ল্যান’ উন্মুক্ত না করা, দরপত্র কার্যে অনৈতিক হস্তক্ষেপ, ক্ষমতাসীন ছাত্রসংঘটনের সাথে উপাচার্যের প্রশ্নবিদ্ব বৈঠকসহ যেসব গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তা সকল বিবেচনায় দুঃখজনক ও বিব্রতকর। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বল প্রয়োগের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং উল্লিখিত অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগসমূহ সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।”