সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
ঢাকা ওয়াসার সার্বিক সেবার মান নিয়ে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি গ্রাহকের অসন্তুষ্টি:
অধিকতর কার্যকর ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে তের দফা সুপারিশ টিআইবি’র
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০১৯: বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার চেষ্টা করলেও ঢাকা ওয়াসার পানি ও পয়নিষ্কাশন সেবায় এখনো ব্যাপক সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিশেষ করে, সার্বিকভাবে পানি ও পয়নিষ্কাশন সেবার নিম্নমানের কারণে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সেবাগ্রহীতার অসন্তুষ্টির প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে অধিকতর কার্যকর ও সেবাধর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে ১৩ দফা সুপারিশ দিয়েছে টিআইবি। “ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক” এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আজ টিআইবি’র ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা ওয়াসার সেবাসংক্রান্ত নানা তথ্য তুলে ধরে এই সুপারিশ প্রদান করে সংস্থাটি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা- নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রণয়ন ও উপস্থাপন করেন টিআইবি’র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাহ্নূর রহমান এবং ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম।
সার্বিকভাবে ঢাকা ওয়াসার সুশাসনের চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের উপায় অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই গবেষণার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসমূহ হলো: ঢাকা ওয়াসা সংশ্লিষ্ট নীতি ও আইন পর্যালোচনা করা; পানি ও পয়নিষ্কাশন সেবা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা ওয়াসার প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা, সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করা; এবং ঢাকা ওয়াসার সেবা সম্পর্কে সেবাগ্রহীতাদের অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টির মাত্রা নিরূপণ করা। গবেষণাটিতে ঢাকা ওয়াসার আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক নানা সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করার পাশাপাশি পানি সেবা, পয়নিষ্কাশন সেবা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা ও কার্যকরতা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চিহ্নিত করে সেগুলো নিরসনে সুপারিশ করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, পূর্বের তুলনায় ঢাকা ওয়াসার উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক অর্জন ও উদ্যোগ রয়েছে। যেমন: সিস্টেম লস কমিয়ে আনা; রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি; ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিলের তথ্য জানা এবং মোবাইল ফোন ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ ব্যবস্থার পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটাল বিলিং সিস্টেম চালু করা; সার্বক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণে হটলাইন স্থাপন; কমিউনিটি প্রোগ্রাম ও কনজ্যুমার রিলেশন বিভাগ গঠন; ৮০টি ওয়াটার এটিএম বুথের মাধ্যমে খুচরা পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা; ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমাতে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প গ্রহণ ইত্যাদি। তবে প্রতিষ্ঠানটির নানা কার্যক্রম পরিচালনায় এখনো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতির পাশাপাশি অনিয়ম ও দুর্নীতি বিদ্যমান। অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ওয়াসা বোর্ডের কার্যকরতায়ও ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া ঢাকা ওয়াসা সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিতে সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি আইনের কার্যকর প্রয়োগেও ঘাটতি লক্ষণীয়। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরণ, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানি উৎপাদন এবং পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিতে সক্ষমতার ঘাটতি বিদ্যমান।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ওয়াসা সংশ্লিষ্ট আইনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট শর্ত এবং চুক্তিভিত্তিক ও খ-কালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলার দায়বদ্ধতার বিষয় উল্লেখ নেই। আইনে পানির মূল্য নির্ধারণের পূর্বে সেবাগ্রহীতাদের মতামত গ্রহণের নির্দেশনা এবং পানির মূল্য নির্ধারণে প্রগ্রেসিভ ট্যারিফ বিষয়েও উল্লেখ নেই। ঢাকা ওয়াসার জন্য অনুমোদিত পদের তুলনায় সার্বিকভাবে ৩১% পদ খালি আছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো ও লজিস্টিকস, সিস্টেম লস কমানোর সক্ষমতা, অংশীজনদের সাথে সমন্বয়, অভ্যন্তরীণ জবাবদিহিতায় ওয়াসা বোর্ডের কার্যকরতা এবং তথ্য ব্যবস্থাপনা ও তথ্যের প্রকৃত হিসাবে নানা ঘাটতি বিদ্যমান। ঢাকা ওয়াসার দুর্বল তদারকি ব্যবস্থা, জনঅংশগ্রহণে ঘাটতি ও গণশুনানিতে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান না হওয়া এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি ইত্যাদি প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানির উৎপাদন ব্যবস্থায় ঘাটতির কারণে গত ১০ বছরে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে পাম্পের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৪৮২টি থেকে ৯০০টিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ভূউপরিস্থ পানি ও ভূগর্ভস্থ পানির অনুপাত ৭০ঃ৩০ করার লক্ষ্য থাকলেও বর্তমানে তা ২২ঃ৭৮। এখনো ভূগর্ভস্থ পানির উপর ৭৮% নির্ভরতা রয়েছে। অতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর ২ থেকে ৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে। অপরদিকে চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহে ঘাটতি থাকায় সেবাগ্রহীতাদের ৪৪.৮% চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না। জরিপে অংশ নেয়া ২০.৬% সেবাগ্রহীতা সারাবছর এবং ৯৪% সেবাগ্রহীতা গ্রীষ্মকালে পানি ঘাটতির সমস্যার কথা জানিয়েছেন। ওয়াসার পানি সরবরাহ ও বিলিং ব্যবস্থায় ন্যায্যতার ঘাটতি যেমন রয়েছে তেমনি পানির মান নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। সেবাগ্রহীতাদের ৫১.৫% সরবরাহকৃত পানি অপরিষ্কার এবং ৪১.৪% সরবরাহকৃত পানি দুর্গন্ধযুক্ত বলে অভিযোগ করেছেন। জরিপে অংশ নেয়া সেবাগ্রহীতাদের মতে তাদের পরিবারের ২৪.৬% সদস্য কোন না কোন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া পানির নিম্নমানের কারণে ৯১.০% সেবাগ্রহীতা পানি ফুটিয়ে পান করায় ঢাকা মহানগরীর খানাসমূহে ব্যয়কৃত জ্বালানীর প্রাক্কলিত অথ্যমূল্য প্রায় ৩৩২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬২০ টাকা।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, পয়নিষ্কাশন সেবায় সক্ষমতা ও কার্যকরতার ঘাটতির কারণে প্রতিদিন ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার ঘনমিটার অপরিশোধিত পয়বর্জ্য বিভিন্ন খাল হয়ে পার্শবর্তী নদীগুলোতে পতিত হয়। এতে ঢাকা ও তার পার্শবর্তী নদী দূষণে ঢাকা ওয়াসারও দায় থেকে যায়। ১৯৯০ সালের পর ঢাকা ওয়াসা নতুন কোন পয়লাইন তৈরী করে নি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট আছে মাত্র একটি, যেটিও আবার সক্ষমতার মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ ব্যবহার করে। জরিপে অন্তর্ভুক্ত সেবাগ্রহীতাদের ২০.৫% পয়নিষ্কাশন সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনেও ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা ও কার্যকরতায় ব্যাপক ঘাটতি বিদ্যমান।
গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা ওয়াসার নিয়োগ, পদায়ন ও বদলি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণসহ ক্রয় প্রক্রিয়া, প্রকল্প বাস্তবায়ন, মিটার রিডিং নেয়া এবং সর্বোপরি গ্রাহক সেবায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি বিদ্যমান। জুলাই ২০১৭ হতে জুন ২০১৮ সময়কালে পানি ও পয়নিষ্কাশন সংক্রান্ত সেবা বা সমস্যা নিয়ে ঢাকা ওয়াসার সাথে যোগাযোগ করা জরিপে অংশগ্রহণকারী ২৬.৯% সেবাগ্রহীতার ৬১.৯%-ই নানা ধরনের অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন সেবার বিষয়ে নানা অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তিতে অভিযোগ ও পরামর্শ কেন্দ্রসহ হটলাইন ব্যবস্থা চালু থাকলেও তাতে ব্যাপক ঘাটতি বিদ্যমান। জরিপে অংশ নেয়া সেবাগ্রহীতাদের ২৭.৫% নানা সমস্যার বিষয়ে অভিযোগ করলেও মাত্র ২.৪% হটলাইনের মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারীদের মধ্যে আবার ৬১.৫% বলেছেন, কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গ্রহণ করলেও কোন সমাধান হয় নি। আর ৬.৯% বলেছেন তাদের অভিযোগ গ্রহণই করা হয় নি। ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে বিল প্রদানসহ ঢাকা ওয়াসার নানাবিধ সেবা কার্যক্রম চালু থাকলেও প্রচারের অভাবে জরিপে অংশ নেয়া সেবাগ্রহীতাদের ৯৮% সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করেন। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে অনলাইনে বিল জমা ও বিল সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার বিষয়ে জানেন না ৫৮.২%, অনলাইনে পানি ও পয়সংযোগের আবেদন করার বিষয়ে জানেন না ৬২.৪%, ওয়াসার বোতলজাত পানি সেবা সম্পর্কে জানেন না ৭২.০%, খুচরা পানি সরবরাহে এটিএম বুথ সম্পর্কে জানেন না ৯১.৯% এবং ওয়াসা লিংক (১৬১৬২) সম্পর্কে জানেন না ৮১.৪%। সার্বিকভাবে ৩৭.৫% সেবাগ্রহীতাই ওয়াসার সেবার মান ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে অসন্তষ্ট বলে গবেষণায় জানা গেছে। এর মধ্যে পানি সরবরাহ ও প্রাপ্যতা নিয়ে ২৯.৬%, পানির মান নিয়ে ৪৭.০%, পয়নিষ্কাশন নিয়ে ৭৮.৫% এবং অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তি নিয়ে ৬৭.৩% সেবাগ্রহীতা অসন্তুষ্ট।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ঢাকা ওয়াসার বিবেচনার জন্য ১৩ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: পানি ও পয়নিষ্কাশন সেবার মূল্য নির্ধারণে স্বতন্ত্র রেগুলেটরি কমিশন গঠন করতে হবে; ওয়াসা বোর্ডের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করতে হবে; জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা একটি একক কর্তৃপক্ষের নিকট ন্যস্ত করতে হবে; শূন্য পদগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করতে হবে; ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানির উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিতে বৃষ্টির পানি ধারণ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; ঢাকা ওয়াসার কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রণোদনার ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং অসাধু কর্মচারীদের চিহ্নিত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে; সেবার মান যাচাই ও উন্নতিকল্পে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেবার মান মূল্যায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে, যা নিয়মিত গণশুনানির মাধ্যমে করা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “উদ্বেগের বিষয় হলো, ওয়াসা তার ভিশন-মিশন অনুযায়ী এখনো পানির চাহিদা পূরণে সুপেয়, নিরাপদ, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানির উৎপাদন ও সরবরাহ এবং পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সন্তোষজনক অগ্রগতি অর্জন করতে পারে নি। ফলে ওয়াসার কাছ থেকে ঢাকাবাসীর প্রত্যাশিত সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এখনো অনেক ঘাটতি বিদ্যমান। এর অন্যতম কারণ, ঢাকা ওয়াসার সুশাসন ও শুদ্ধাচারে ঘাটতি এবং সেবাপ্রদান পর্যায় থেকে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিশেষ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট ক্রয় খাতে চলমান দুর্নীতি। সম্প্রতি বেশ কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হলেও সেগুলো এগিয়ে নেয়ার জন্য আরো পরিবর্তন দরকার, যেক্ষেত্রে আমরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছি। আমরা মনে করি, আমাদের এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে ঢাকা ওয়াসার সুশাসন ও শুদ্ধাচারের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হবে।”
অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, “প্রতিবেদনে যে কথাগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এ অভিজ্ঞতাগুলো রয়েছে। আমরা কখনো অত্যন্ত অযৌক্তিকভাবে পানির অভাব বোধ করেছি আবার কখনো বাড়ি থেকে বের হয়ে পয়নিষ্কাশনের সমস্যায় পড়েছি। যে সুপারিশগুলো করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সেগুলো কার্যকর করতে পারে তাহলে সমস্যাগুলি সমাধানের একটা উপায় বের হয়ে আসবে।”
উল্লেখ্য, এপ্রিল ২০১৮ হতে মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন তথ্যের বিবেচ্য সময়সীমা ছিল ২০১০-২০১৮ সাল পর্যন্ত। গবেষণাটি মিশ্র গবেষণা পদ্ধতিতে (গুণবাচক ও পরিমাণবাচক) পরিচালিত হয়েছে এবং উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রত্যক্ষ তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি হিসেবে সেবাগ্রহীতা জরিপ, মুখ্য তথ্যদাতার সাক্ষাৎকার এবং পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। আর পরোক্ষ তথ্যের উৎস হিসেবে পানি ও পয়সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রবন্ধ, গবেষণা প্রতিবেদন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ, সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করা হয়েছে। সেবাগ্রহীতা জরিপে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও এলআইসি সেবাগ্রহীতাদের মধ্য থেকে বহুস্তরায়িত গুচ্ছ নমুনায়ন, আনুপাতিক হার ও দৈবচয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করে সর্বমোট ২৭৬৮ জন সংযোগ গ্রহণকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
গণমাধ্যম যোগাযোগ:
শেখ মন্জুর-ই-আলম
পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন)
মোবাইল: ০১৭০৮৪৯৫৩৯৫
ই-মেইল: manjur@ti-bangladesh.org