সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
শিক্ষা খাতে সুশাসন নিশ্চিত করে মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান টিআইবি’র
ঢাকা, ১ এপ্রিল ২০১৮: প্রশ্ন ফাঁস রোধে পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) (সংশোধন) ১৯৯২ এর ৪ ধারা পুনরায় সংশোধন করে শাস্তির মাত্রা পূর্বের ন্যায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান প্রণয়ন এবং নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই সুপারিশ করে টিআইবি। ৯ দফা সুপারিশমালার অন্যগুলো হচ্ছে: ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২’ এর অস্পষ্টতা দূর করা এবং কোচিং বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন প্রণোদনাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা; প্রশ্ন ফাঁস রোধ ও সৃজনশীল পদ্ধতির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গাইড বইয়ের আদলে প্রকাশিত সহায়ক গ্রন্থাবলী বন্ধে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা; তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে তদারকি বাড়ানো ও প্রচলিত আইনের অধীনে শাস্তি নিশ্চিত করা; ধাপ কমিয়ে প্রশ্ন প্রণয়ন, ছাপানো ও বিতরণের কাজটি পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা এবং পরবর্তীতে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা; প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনসমূহ জনসম্মুখে প্রকাশ এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা; শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ব্যবস্থাপনাগত যেকোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা; প্রশ্ন ফাঁস রোধে বহুনির্বাচনী প্রশ্নব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে তুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা; পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট রাখা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে টিআইবি’র রিসার্চ ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান বলেন, “আপাতঃদৃষ্টিতে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টিকে ক্ষুদ্র দুর্নীতি মনে হলেও এর ভবিষ্যত প্রতিক্রিয়া মারাত্মক ভয়াবহ ও সুদীর্ঘ। শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে ভবিষ্যত কর্মক্ষেত্রেও এর জের টানতে হয়। বছরের পর বছর পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের যে ‘দুষ্ট ঐতিহ্য’ তৈরী হয়েছে তা থেকে দেশকে মুক্ত করতে না পারলে সুশাসন ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সুদূর পরাহত থেকে যাবে। তাই অবিলম্বে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টজনদের সুপারিশ আমলে নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাই।”
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র সিভিক এনগেইজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস এবং অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের পরিচালক আব্দুল আহাদ, এফসিএমএ। এছাড়াও টিআইবি’র সদস্য, টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ, টিআইবি কর্মী ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। পাশাপাশি টিআইবির’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ঢাকার বাইরে আরো ৪৫টি অঞ্চলে একযোগে এ মানবন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, অব্যাহত প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে গত ৫ আগস্ট ২০১৫ তারিখে টিআইবি ‘পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস: প্রক্রিয়া, কারণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায় যে, প্রশ্ন ফাঁসের সাথে সম্পৃক্ত সুবিধাভোগীরা ফাঁসকৃত প্রশ্ন বিতরণ বা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে এবং প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এক ধরনের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। ওই প্রতিবেদনেও টিআইবি প্রশ্ন ফাঁস রোধে বিভিন্ন সুপারিশ করেছিল যা ইতোমধ্যে সরকার আংশিক বাস্তবায়ন করেছে। প্রশ্ন ফাঁস পূর্ণ রোধকল্পে টিআইবি তার সকল সুপারিশসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছে।
গণমাধ্যম যোগাযোগ:
মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম
সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার
আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন
মোবাইল: ০১৭৪০৯২৮৬৪
ই-মেইল: zahid@ti-bangladesh.org