সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
জাগ্রত বিবেক নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুঁখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় টিআইবি’র
সদস্যদের
বার্ষিক সভায় দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ৯ দফা দাবি উত্থাপন
ঢাকা, ১৬ মার্চ ২০১৮: দুর্নীতিকে সর্বান্তকরণে ঘৃণা করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুঁখে দাঁড়ানোর সম্মিলিত
প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র সদস্যদের বার্ষিক
সভা। গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন
কমিশন (দুদক)সহ জাতীয় শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছেন টিআইবি’র
সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে টিআইবি’র ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় সদস্যরা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে
দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণকে অধিকতর সম্পৃক্ত করে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
দুর্নীতিমুক্ত ও সুশাসিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সভারঘোষণাপত্রেনয় দফা দাবিও উত্থাপন করা হয়।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড.
ইফতেখারুজ্জামান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় টিআইবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এবং
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও টিআইবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
টিআইবি’র সাধারণ পর্ষদে টিআইবি’র সদস্যদের প্রতিনিধি অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. ফজলুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় মোট
৪৬ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি
মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে টিআইবি’র সদস্যরা প্রশ্নফাঁস বন্ধে সরকারের ব্যর্থতায়
তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা প্রশ্নফাঁস, ভর্তিবাণিজ্য ও নিয়োগবাণিজ্য বন্ধে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
জানিয়ে এসব অপরাধের সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। তারা বলেন, অবাধ তথ্য প্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
গণতন্ত্র ও সুশাসনের পূর্বশর্ত এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হাতিয়ার। তথ্য অধিকার আইনসহ জনস্বার্থ
সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশকারীর সুরক্ষা আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং গণমাধ্যমসহ জনগণের মত ও তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা
প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্যোগী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের
৫৭ ধারা, প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা এবং বৈদেশিক অনুদান (সেচ্ছাসেবামূল কার্যক্রম) রেগুলেশন আইনের ১৪
ধারা বাতিলের দাবিও জানান টিআইবি’র সদস্যরা।
দুর্নীতি দমন সহজ কাজ নয় এবং এ কাজের প্রতিটি পদক্ষেপে বিভিন্ন
পর্যায় থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা আসবে বলে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল সমাজের প্রতিটি স্তরের প্রত্যেক
ব্যক্তিকে নিজ অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান গ্রহণের আহ্বান
জানান।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সম্প্রতি টিআইবি পরিচালিত গবেষণা, অধিপরামর্শ ও
প্রচারণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য সভায় উপস্থাপন করেন।
সভার শেষে এক ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ঘোষণাপত্রে
দুর্নীতিকে সর্বান্তকরণে ঘৃণা করার সম্মিলিত অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে দুর্নীতি থেকে বিরত
থেকে প্রত্যেকে নিজ অবস্থান অনুযায়ী একক ও সমষ্টিগতভাবে দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে প্রতিরোধের চেষ্টাসহ ন্যায্য, সুশাসিত ও
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সবাই একযোগে কাজ করতে সচেষ্ট থাকার অঙ্গীকার করা হয়। এছাড়া সকল স্তরে কার্যকর,
জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠানের বিকাশের দাবিসহ সমান অধিকার নিশ্চিতে আইনের শাসন, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক চর্চা
প্রতিষ্ঠা; তৃণমূলে কার্যকর, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সেবা প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়। একইসাথে তথ্যের অধিকার, অবাধ তথ্য
প্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ; জাতীয় উন্নয়নে স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ ও পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল হওয়া; কালো
টাকা বৈধ করার সুযোগ বাতিল করা; আর্থিক খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ এবং দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে কার্যকর
দুর্নীতি দমন কমিশনের দাবিসহ ৯ দফা দাবি উত্থাপন করা হয় সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে
দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের কার্যক্রমে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে আগ্রহী বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ নাগরিককে টিআইবি
সদস্যভুক্ত করে আসছে। টিআইবি’র বর্তমান সদস্য সংখ্যা ২১০ জন।
গণমাধ্যম
যোগাযোগ,
রিজওয়ান-উল-আলম
পরিচালক
আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন
মোবাইল: ০১৭১৩০৬৫০১২
ই-মেইল: rezwan@ti-bangladesh.org