নিয়ন্ত্রণহীন ও নিম্নমানের বেসরকারি চিকিৎসা সেবায় আর্থিক ও স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা কমিশন ব্যবসা ও বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধের মাধ্যমে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান টিআইবি’র

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
 
নিয়ন্ত্রণহীন ও নিম্নমানের বেসরকারি চিকিৎসা সেবায় আর্থিক ও স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা
কমিশন ব্যবসা ও বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধের মাধ্যমে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান টিআইবি’র 
 
ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮: প্রয়োজনীয় নীতিগত সহায়তার অভাব, পরিদর্শন ও তদারকির ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি এবং অতি-মুনাফাভিত্তিক প্রকট বাণিজ্যিকীকরণের সম্মিলিত প্রভাবে বেসরকারী চিকিৎসাসেবা খাত কার্যত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে সেবাগ্রহীতাদের দুর্দশা প্রান্তসীমায় উপনীত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বেসরকারী চিকিৎসাসেবা খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছে। আজ টিআইবি’র ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে ‘বেসরকারী চিকিৎসাসেবা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপাায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নসহ এ খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে টিআইবি আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশও পেশ করে। টিআইবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবি’র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার ও ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ জুলকারনাইন।
বেসরকারি চিকিৎসাসেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিতকরণ ও তা থেকে উত্তরণে কার্যকর ও বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশমালা প্রদানের উদ্দেশ্যে এ গুণগত গবেষণাটি জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ সময়ের মধ্যে পরিচালিত হয়। বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ঢাকা মহানগরীর ২৬টি ও ঢাকার বাইরে আট বিভাগের ৯০টি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১১৬টি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান থেকে গবেষণার তথ্য সংগৃহীত হয়। এর মধ্যে ৬৬টি হাসপাতাল এবং ৫০টি রোগ-নির্ণয় কেন্দ্র। বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান, সেবাদাতা, সেবাগ্রহীতা, নিয়ন্ত্রণকারী ও তদারকি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিসহ মোট ৭০৬ জন অংশীজন এবং ২৭টি ফোকাস দল আলোচনায় ৩১০ জন অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও বেসরকারি চিকিৎসাসেবা সম্পর্কিত আইন, বিধিমালা, সরকারি নথিপত্র, গবেষণা প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যম ও ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ  প্রতিবেদন ও তথ্য পর্যালোচিত হয়েছে। এ গবেষণায় বেসরকারি চিকিৎসাসেবা বলতে ব্যক্তি মালিকানাধীন নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং রোগ-নির্ণয় কেন্দ্র প্রদত্ত সেবাকে বোঝানো হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, সকল অংশীদারের সমান সাড়ার অভাব, স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে উদ্যোগ সত্ত্বেও এ খাতের জন্য পৃথক আইন চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। আইনি সীমাবদ্ধতা, বিদ্যমান যে আইন রয়েছে তা বর্তমান ব্যবস্থার সাথে সংগতিপূর্ণভাবে হালনাগাদ না হওয়া, আইন ও নীতির প্রয়োজনীয় প্রয়োগ না হওয়া এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ, পরিদর্শন ও তদারকি কার্যক্রমে ঘাটতিসহ সরকারের যথাযথ মনোযোগের ঘাটতির কারণে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। এর ফলে অতি-মুনাফাভিত্তিক বাণিজ্যিকীকরণের প্রবণতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সেবার অতিরিক্ত মূল্য আদায়সহ কিছু ব্যক্তির এ খাত থেকে বিধি-বহির্ভূত সুযোগ-সুবিধা আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষ করে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সক্ষমতার ঘাটতি ও অনিয়মের প্রবণতা অধিকতর লক্ষণীয়। অবকাঠামো, জনবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতিসহ সার্বিক সক্ষমতায় ঘাটতি থাকায় সেবাগ্রহীতারা সঠিক ও মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ও স্বাস্থ্যগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দেশের চিকিৎসাসেবার প্রতি আস্থা হারিয়ে সেবাগ্রহীতাদের বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
গবেষণার পর্যবেক্ষণে আরো উল্লেখ করা হয়, নিবন্ধন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকার অবৈধ লেনদেন হচ্ছে এবং  প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, মালিক বা অংশীদারদের প্রভাব-প্রতিপত্তির ওপর এ অর্থের পরিমাণ নির্ভর করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদারকি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিদর্শনের তারিখ হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে পূর্বেই জানিয়ে দেওয়া হয় এবং সে অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান ওই নির্দিষ্ট দিনের জন্য জনবল ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র সঠিক রাখে। কিছু ক্ষেত্রে নবায়নের সকল শর্ত পালনে ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও সর্বনিম্ন পাঁচশ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে নিবন্ধন নবায়নের সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে। অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ করার কোনো আইন নেই। আবার বিভিন্ন বিষয়ে চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবাগ্রহীতার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা, সংঘাত ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটলেও সেবা প্রদানকারীর নিরাপত্তা এবং প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই। সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি কার্যক্রম প্রভাবিত করতে এবং প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণহীন মুনাফাভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা অবাধ করার লক্ষ্যে সাংবাদিক, রাজনীতিক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের বেসরকারী হাসাপাতাল ও ক্লিনিকের মালিকানার অংশীদার করা হয়। এছাড়া পর্যাপ্ত রোগী ও সেবাগ্রহীতা পেতে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স, পল্লী চিকিৎসক ও মেডিকেল প্রতিনিধিদের প্রতিষ্ঠানের মালিকানার অংশীদার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রবণতা লক্ষণীয়। আবার মালিকদের একাংশসহ পরিবার পরিকল্পনাকর্মী, ফার্মেসীর ওষুধ বিক্রেতা, ধাত্রী, বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানের রিসিপশনিস্ট, রিক্সাচালক ও পেশাদার দালালদের সমন্বয়ে এ খাতে কমিশনভিত্তিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে ওঠার প্রবণতা লক্ষণীয়। 
গবেষণার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগ-নির্ণয় কেন্দ্র নিবন্ধিত না হয়েই কার্যক্রম শুরু করে এবং দেশব্যাপী কতগুলো অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার কোনো তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত মোট ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেখা যায়, ৯৭টিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, ৩২টিতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের ঘাটতি রয়েছে, ৭৭টিতে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক টয়লেট ব্যবস্থা নেই, ৪২টি প্রতিষ্ঠান নিয়মবহির্ভূতভাবে আবাসিক এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ২২টি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একই ভবনে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি নিয়মবহির্ভুতভাবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি লক্ষণীয়। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত ৬৬টি হাসপাতালে সার্জারি সুবিধা থাকলেও ৯টিতে পোস্ট-অপারেটিভ কক্ষ নেই, ৫২টিতে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক নেই, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের ২০টি হাসপাতাল অনুমোদন না নিয়েই বিশেষায়িত সেবা যেমন- আইসিইউ, সিসিইউ, এনআইসিইউ, কার্ডিয়াক প্রভৃতি সেবা প্রদান করছে এবং ২৩টি হাসপাতাল অনুমোদন না নিয়েই শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বেশিরভাগ হাসপাতালের নিজস্ব চিকিৎসক নেই এবং এ পর্যায়ের ২১টি হাসপাতালে জরুরি সেবার কোনো ব্যবস্থা না থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত ৫০টি রোগ-নির্ণয় কেন্দ্রের ১২টিতে পৃথক নমুনা সংগ্রহ কক্ষ এবং ২৬টিতে প্যাথলজিস্টদের পৃথক কক্ষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আর ২১টি প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় সেবাগ্রহীতাদের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রদর্শন করা হয়নি। অধিক মুনাফা অর্জনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনেক সময় প্রসূতিকে সিজারিয়ান প্রসবে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে। দেশে সিজারিয়ান নবজাতক প্রসবের হার ২০০৪ সালের ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৪ সালে ২৩ শতাংশে পৌঁছায়। এলাকাভেদে সেবার মূল্যের ব্যাপক তারতম্যও লক্ষণীয়।  এছাড়াও, অধিক মুনাফার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সেবাগ্রহীতার অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ অতিরিক্ত ওষুধ ক্রয়ের পরামর্শ প্রদান, এক রোগীর অতিরিক্ত ওষুধ পরবর্তীতে অন্য রোগীর কাছে বিক্রয়, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নি¤œমানের রি-এজেন্ট ব্যবহার, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সঠিক না হওয়া, পরীক্ষা না করেই প্রতিবেদন তৈরি যা স্থানীয় পর্যায়ে ‘বালতি টেস্ট’ নামে পরিচিত প্রভৃতি অনিয়মের তথ্য গবেষণায় পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাতকে একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাত স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও মূলত উচ্চ মুনাফাভিত্তিক ব্যবসা হিসেবে খাতটির বিকাশ ঘটছে। ১৯৮২ সালের  যে অধ্যাদেশের ওপর ভিত্তি করে এ খাতের সেবা চলছে তাতে কোনো বিধিমালা না থাকায় বিভিন্ন সময় প্রণীত শুধু সরকারি নির্দেশের ওপর ভিত্তি করেই খাতটি পরিচালিত হচ্ছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যে খসড়াটি প্রণীত হচ্ছে তা রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি, অংশীজনদের মধ্যে মতানৈক্য বা কোনো বিশেষ শ্রেণির অংশীজনের প্রভাবের কারণে এখন পর্যন্ত অনুমোদিত হয়নি এবং সংসদে গৃহীত হয়নি যা অত্যন্ত নেতিকবাচক দৃষ্টান্ত। যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও পরিবীক্ষণের ঘাটতির সুযোগে সৃষ্ট বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাগণ প্রতারিত হচ্ছেন। এ ধরনের ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিমালিকাধীন খাত নিয়ন্ত্রণের পুরো দায়িত্ব সরকারের ওপর অর্পিত থাকলে তা সরকারের জন্য একটি বোঝাস্বরূপ এবং এতে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও বস্তুনিষ্ঠতা নির্ধারণ ও নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এজন্য বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদেরও এই খাতে পরিবীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ স্বাস্থ্যসেবা কমিশন গঠন করা যেতে পারে যে কমিশন এ খাতের চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানের উপায় অনুসন্ধান করবে এবং সে অনুয়ায়ী কাজ করার সুযোগও সৃষ্টি করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র পক্ষ থেকে বেসরকারি চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নসহ এ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণ ও পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদারকরণের সুপারিশ করা হয়। এ লক্ষ্যে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি সংক্রান্ত খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করে আইন হিসেবে প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক ও তদারকি প্রতিষ্ঠানসমূহের সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। অন্যান্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে: নার্সিং হোম, ক্লিনিক, জেনারেল হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও রোগ-নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণসহ সেবার ধরন ও শয্যার সংখ্যা অনুযায়ী এগুলোর শ্রেণিকরণ; শ্রেণি অনুযায়ী অবকাঠামো, জনবল, যন্ত্রপাতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি সংক্রান্ত ন্যূনতম মানদ-, সেবার মূল্য, নিবন্ধন ও নবায়ন ফি নির্ধারণ; নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতকরণ; বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং আইন ও নিয়ম ভঙ্গকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তির পরিমাণ সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মতভাবে বৃদ্ধিকরণ। এছাড়াও, লাইসেন্স আবেদন ও নবায়নে অনলাইন ব্যবস্থার প্রচলন; স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন প্রাপ্তি ও নিবন্ধন নবায়নে তৃতীয় পক্ষ দ্বারা নিরীক্ষা ও যাচাইয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ; প্রতিষ্ঠান ও সেবা সম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষণ; এবং অনিবন্ধিত সকল চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে টিআইবি।
গণমাধ্যম যোগাযোগ,
 
রিজওয়ান-উল-আলম
পরিচালক, আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ
মোবাইল: ০১৭১৩০৬৫০১২
ই-মেইল: rezwan@ti-bangladesh.org
 

 


Press Release