টিআই আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসনের ঢাকা সফর: বৈশ্বিক দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারগুলোর সমন্বিত ও কার্যকর কৌশল প্রয়োজন
ঢাকা, ১৭ অক্টোবর ২০১৬:বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন হোসে কার্লোস উগাজ সান্চেজ মোরিনো দু’দিনের সফরের শেষদিনে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্ব স্ব দেশের দুর্নীতি প্রতিরোধের পাশাপাশি বৈশ্বিক দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারগুলোর সমন্বিত ও কার্যকর কৌশল গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন ত্বরান্বিত করতে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ের পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ই তাঁর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল। দু’দিনের সফরকালে আইনের এই অধ্যাপক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এবং টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালসহ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সুশীল সমাজের সদস্য ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের সাথে সাক্ষাৎ করেন। টিআই পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন হোসে কার্লোস উগাজ এমন একটি সময় বাংলাদেশে এসেছেন, যখন টিআইবি সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমসহ সকল পর্যায়ের অংশীজনের সমন্বয়ে ও প্রয়াসে একটি কার্যকর দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার নিরন্তর প্রচেষ্টার বিশ বছর পূর্তি উদ্যাপন করছে। ১৬ অক্টোবর টিআইবি’র অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ‘গণমাধ্যম ও দুর্নীতি’-র ওপর আলোচনাকালে তিনি বাংলাদেশী সাংবাদিকদের দুর্নীতি প্রতিরোধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ইয়ুথ এনগেইজমেন্ট ও সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ, স্বজন, ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপ ও টিআইবি’র সদস্যদের সাথে আজ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক মতবিনিময়ে টিআই চেয়ারপারসন দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে এই যোদ্ধাদের সাহসী অবদানের প্রশংসা করে তিনি তাদের আরও দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যেতে বলেন। দুর্নীতিকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারগুলোর সমন্বিত ও কার্ষকর কৌশল গ্রহণ প্রয়োজন। উল্লেখ্য, টিআইবি’র জনসম্পৃক্ততা ও অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রমের আওতায় সারাদেশে ৪৫টি সনাক অঞ্চল ও ঢাকায় প্রায় ছয় হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবী সক্রিয়ভাবে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে, যাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে তরুণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, ভূমি ও জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবীগণ বিভিন্ন কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে। একইসাথে টিআইবি প্রবর্তিত সেবা প্রদান পর্যায়ে সামাজিক জবাবদিহিতা (সোশ্যাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি) টুলস আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে টিআইবি’র কর্মকান্ডের ব্যাপ্তি ও অভিনবত্বের কারণে টিআই সেক্রেটারিয়েটসহ বিভিন্ন চ্যাপ্টার থেকে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ তাঁদের অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময়ের জন্য টিআইবি’র আতিথ্য গ্রহণ করে থাকেন। এছাড়া, টিআই এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ড. পিটার আইগেন ও সাবেক চেয়ারপারসন ড. হিউগেট লেবেল ইতিপূর্বে বাংলাদেশ সফর করেছেন।