দুর্জয় তারুণ্য-দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসাথে: দুর্নীতিবিরোধী প্রত্যয়ে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী টিআইবি-ডিইউডিএস জাতীয় স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা

ঢাকা, ১১ আগস্ট ২০১৬:দুর্জয় তারুণ্য-দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসাথে” এই প্রতিপাদ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (ডিইউডিএস) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা ক্ষুদে বিতার্কিকদের যুক্তির প্রাণবন্ত উপস্থাপনা ও দুর্নীতিবিরোধী প্রত্যয়ের মাধ্যমে আজ সমাপ্ত হয়েছে। ১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
আয়োজনটির সমাপনী দিনে আজ সারাদেশের বিভিন্ন স্কুল থেকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বারোয়ারি বিতর্কের মাধ্যমে প্রথম দিনের প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত সেরা ২৮ জন বিতার্কিক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ছায়া সংসদ এর সরকার দলীয় নেতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উত্থাপিত ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ প্রস্তাব ২০১৬’ এর ওপর শুরু হয় ছায়া সংসদ বিতর্ক। এতে স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলনের উদ্যোগ গ্রহণ প্রস্তাব ২০১৬’ প্রস্তাবনার ওপর সংসদীয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। দুটি পর্বে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন বিতার্কিক ও শিক্ষকবৃন্দ।
বিকাল ৫.৩০টায় সমাপনী পর্বে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেরা বিতার্কিক হিসেবে নির্বাচিত হন উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেবাশীষ বিশ্বাস। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা হিসেবে নির্বাচিত হন যথাক্রমে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের রেদওয়ানুল ইসলাম এবং শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের ফারহানা আমিন রিপা।
প্রথম দিনে গ্রুপ পর্যায়ের বারোয়ারি বিতর্কে শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল ও কলেজের অদিতি বৈরাগী, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের রেদওয়ানুল ইসলাম, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শাহ আদানউজ্জামান ও ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল ও কলেজের শিমি আফসারা।
সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. . . . . আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ডিইউডিএস এর মডারেটর অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন এবং ডিইউডিএস এর সভাপতি রায়হার সানন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিইউডিএস এর সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল কবির শয়ন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে অধ্যাপক ড. . . . . আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “তরুণদেরকে নিজেদের পরিশুদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং যুক্তির মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।” অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, “বাংলাদেশ কখনো জঙ্গী কিংবা দুর্নীতিবাজদের দখলে যাবে না। তরুণরাই একে প্রতিহত করবে। তারাই রুখে দাঁড়াবে।” টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমাদের জাতীয় চেতনার সঙ্গে জঙ্গীবাদের কোন সংযোগ নেই। সাধারণ মানুষের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করলে একে মোকাবেলা করা সম্ভব।”
১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষ্যে দুইদিন ব্যাপী এ আয়োজনে টিএসসি প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী প্রদর্শিত হয় দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন। এছাড়া ১০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় দুর্নীতিবিরোধী নাটক এবং মানববন্ধন।
Media Contact

Press Release