ঘুষের ঘটনা ও অভিজ্ঞতা জানাতে টিআইবি’র অনলাইনভিত্তিক নতুন উদ্যোগ ‘রিপোর্ট করাপশন’
ঢাকা, ০২ নভেম্বর ২০১৫:ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে দেশের জনগণকে অধিকতর সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে অনলাইনভিত্তিক ‘রিপোর্ট করাপশন’ নামে নতুন এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ প্রাথমিক পর্যায়ে টিআইবি’র কর্ম-পরিধির পাঁচটি ক্ষেত্র - স্বাস্থ্য, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, ভূমি ও জলবায়ু অর্থায়নে সংঘটিত ঘুষের ঘটনা ও অভিজ্ঞতা স্বপ্রণোদিত ও সরাসরিভাবে জানানোর সুযোগ পাবেন। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো: সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্নীতিপ্রবণ খাত ও এর প্রবণতা চিহ্নিত করা; সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে অধিকতর প্রচার, যোগাযোগ ও অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম গ্রহণ এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগসমূহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ও এ বিষয়ে পরবর্তীতে ফলো-আপ করা।
উল্লেখ্য, টিআইবি ব্যক্তির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করে না এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোনো আইনি বা প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের এখতিয়ার টিআইবি’র নেই। তবে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রেখে প্রাপ্ত তথ্যের নিয়মিত বিশ্লেষণ করে টিআইবি সেবা গ্রহীতাদের ঘুষ দুর্নীতিজনিত হয়রানির মাত্রা কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
টিআইবি’র বিভিন্ন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেশের জনগণের একটি বড় অংশ ঘুষ দুর্নীতির শিকার। টিআইবি’র ২০১২ সালের জাতীয় খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী ৫৩.৩% খানার উত্তরদাতাই বলেছেন যে, বিভিন্ন ধরণের সেবা পেতে তাদেরকে ঘুষ দিতে হয়েছে। অন্যদিকে, ২০১০ সালের জাতীয় খানা জরিপের তথ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, টাকার অঙ্কে ঘুষের পরিমাণ ২০১২ সালে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। টাকার অঙ্কে ২০১০ সালে ঘুষের পরিমাণ ছিল জিডিপি’র ১.৪% বা জাতীয় বাজেটের ৮.৭% যা ২০১২ সালে বেড়ে জিডিপি’র ২.৪% এবং জাতীয় বাজেটের ১৩.৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
উল্লেখ্য, টিআইবি’র চলমান বিবেক (বিল্ডিং ইন্টিগ্রিটি ব্লকস্ ফর ইফেক্টিভ চেইঞ্জ) প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় পর্যায়ে টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত ৪৫টি সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)’র মধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনটি সনাক (রাঙ্গামাটি, খুলনা ও লালমনিরহাট) এর কর্ম এলাকায় অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লিগ্যাল অ্যাডভাইস সেন্টার বা অ্যালাক নামে নতুন একটি উদ্যোগ পাইলট ভিত্তিতে কার্যক্রম শুরু করেছে। পরবর্তীতে আরো ছয়টি প্রকল্প এলাকায় অ্যালাকের কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। অ্যালাকের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ সরাসরি উপস্থিত হয়ে বা ফোনের মাধ্যমে দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ বা ঘটনা জানানোর পর অ্যালাকের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইনি পরামর্শ ও রেফারেল সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, অ্যালাক প্রকল্প এলাকার জনগণ এসএমএস-এর মাধ্যমেও দুর্নীতির ঘটনা জানানোর সুযোগ পাবেন, যা পরবর্তীতে দেশব্যাপী প্রবর্তন করা হবে।
ঘুষের ঘটনা ও অভিজ্ঞতা জানানোর পদ্ধতি, নমুনা এবং এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন www.ti-bangladesh.org/rcএই ঠিকানায়।