কপ-২১ প্যারিস সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দশ দফা দাবি টিআইবি’র
চট্টগ্রাম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় ইউএনএফসিসি’র ‘‘সাধারণ কিন্তু স্ব-স্ব সক্ষমতার ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বশীলতা (Common But Differentiated Responsibility)” নীতি মেনে ব্যাপক ভিত্তিক কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে শিল্পোন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ সমূহকে ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত কপ-২১ সম্মেলনে আইনী বাধ্যতার মধ্যে চুক্তি এবং জলবায়ু তহিবল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছে টিআইবি। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর ২০১৫ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন (কপ-২১) উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রচারণার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
প্রচারণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টিআইবি এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি (সিইউডিএস) এর যৌথ উদ্যোগে আজ বিকেলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এক মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি টিআইবি ও সনাক চট্টগ্রাম মহানগর এর সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি (সিইউডিএস) এর আয়োজনে ‘‘জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতাঃ জাগ্রত বিবেক, দুর্জয় তারুণ্য, দুর্নীতি রুখবেই” শ্লোগানে তিন দিন (০৩-০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫) ব্যাপী “আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক উৎসব ২০১৫” এর আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন মু. জাকির হোসেন খান, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার-জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন, টিআইবি এবং সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, সভাপতি, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চট্টগ্রাম মহানগর। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জেসমিন সুলতানা পারু, আহ্বায়ক-সিএফজি উপকমিটি, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চট্টগ্রাম মহানগর, সহযোগী অধ্যাপক ড.এ.বি.এম. আবু নোমান, সহযোগী সঞ্চালক, চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, জুবায়ের আহমেদ, সভাপতি চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও আশরাফ হোসেন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, টিআইবি।
সম্মেলনে কপ-২১ সামনে রেখে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যাপক ভিত্তিক কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে শিল্পোন্নত এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশ সমূহকে ইউএনএফসিসিসি’র ‘সাধারণ কিন্তু সকলের ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বশীলতা’ নীতির আওতায় ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত কপ-২১ সম্মেলনে আইনী বাধ্যতার মধ্যে চুক্তির যৌথ লক্ষ্য অর্জন; কপ-২১ সম্মেলনে ‘দুষণকারী কর্তৃক ক্ষতিপূরণ’ নীতির আওতায় শুধুমাত্র অনুদানকে স্বীকৃতি দিয়ে জলবায়ু অর্থায়নের সর্বসম্মত সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং একইসাথে দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু অর্থায়নের একটি পথনকশা (রোডম্যাপ) নির্ধারণ; জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ সকল ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অভিযোজন পরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন এবং তহবিল প্রদানে অভিযোজনকে অগ্রাধিকার প্রদান, “নতুন” ও “অতিরিক্ত” তহবিল অনুদান হিসাবে দ্রুত ছাড়; জিসিএফ ও অন্যান্য উৎস হতে জলবাযু তহবিলের যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবহারে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহকে কাঙ্খিত স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিতে বাংলাদেশ কর্তৃক সুনির্দিষ্ট এবং কার্যকর প্রস্তাব পেশের পাশাপশি অভিযোজন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, অনুমোদন, তহবিল বন্টন, প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং তদারকি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী সহ নাগরিক ও সুশীল সমাজের সক্রিয় ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের জোরালো অবস্থান গ্রহণের দাবিসহ নয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।