রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সংগৃহিত, ব্যয়িত ও অব্যবহৃত অর্থ সম্পর্কে
সকল তথ্য প্রকাশের আহবান টিআইবি’র
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০১৫: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে রানা প্লাজা ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সংগৃহীত অর্থ অব্যয়িত থাকা প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নাকচ করার সংবাদ আজ শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে টিআইবি তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, টিআইবি জাতীয় সংসদে সরকারের একজন মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্লেষন করেছে মাত্র; যদি উক্ত তথ্য সঠিক না হয় তা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরই উচিত ব্যাখ্যা করা। একইসাথে সকল বিভ্রান্তি নিরসনে এ সম্পর্কিত সকল তথ্য প্রকাশ করা বাঞ্ছনীয় মনে করছে টিআইবি।
গত ২১ এপ্রিল প্রকাশিত টিআইবি’র ‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন বাস্তবায়নে গৃহীত পদক্ষেপ: গত এক বছরের অগ্রগতি পর্যালোচনা’ শীষর্ক এক গবেষণা প্রতিবেদনে অন্যান্য পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সংগৃহীত অর্থ প্রসঙ্গে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে সংগৃহীত মোট অর্থের প্রায় ১৬ মিলিয়ন ইউএস ডলার (প্রায় ১২৭ কোটি টাকা) যা থেকে প্রায় ২.৪৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদানের পর এখনো প্রায় ১৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার (১০৮ কোটি টাকা) অব্যবহৃত রয়েছে।
রানা প্লাজা নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আলাদা কোন তহবিল নেই এবং তহবিল অব্যবহৃত সংক্রান্ত টিআইবি’র তথ্য সত্য নয় মর্মে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং’র এক ব্যাখ্যাগত ২২ এপ্রিল বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান একই তারিখে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘এটা সত্য যে রানা প্লাজা নামে প্রধানমন্ত্রীর কোন বিশেষ ত্রাণ তহবিল নেই এবং রানা প্লাজা নামে প্রধানমন্ত্রীর কোন বিশেষ ত্রাণ তহবিল রয়েছে মর্মে টিআইবি’র প্রতিবেদনেও কোন পর্যবেক্ষণও ছিল না।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-৪ কর্তৃক টিআইবি’র উল্লিখিত প্রতিবেদন নাকচ হওয়ার প্রেক্ষিতে ড. জামান বলেন:“কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের এক প্রশ্নের জবাবে সংসদকে জানিয়েছিলেন যে সাভার ট্রাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ত্রাণ হিসেবে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে জমা দেয়া অর্থের পরিমাণ ১২৭ কোটি ৬৭ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪৯ টাকা। জাতীয় সংসদে প্রদত্ত কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর উক্ত বক্তব্য পরের দিন (১৫ জুলাই) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল এবং টিআইবি উক্ত তথ্য নির্ভরযোগ্য বিবেচনা করেই আলোচ্য গবেষণা প্রতিবেদনে তা সন্নিবেশিত করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “টিআইবি আশা করে যে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারের একজন সম্মানিত মন্ত্রী প্রদত্ত ভাষণ অনুযায়ি রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সংগৃহীত অর্থের একাংশ অব্যয়িত থাকার তথ্য যদি সঠিক না হয়ে থাকে তবে তা সরকারেরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশোধন করাই প্রতাশিত”। একই সাথে এক্ষেত্রে সচ্ছতা নিশ্চিত করা ও সকল প্রকার বিভ্রান্তি নিরসনের স্বার্থে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কোন কোন সূত্র থেকে কি পরিমাণ অর্থ সংগৃহিত ও ব্যয়িত হয়েছে এবং কি পরিমাণ অর্থ অব্যবহৃত রয়েছে সে ব্যাপারে স্বতপ্রনোদিতভাবে সকল তথ্য প্রকাশের আহবান জানায় টিআইবি।