সিএজি কার্যালয়ে জনবল নিয়োগে অস্বাভাবিক রাজনৈতিক চাপে টিআইবি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন; প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ দাবি

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪: সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিএজি)তে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৬জন প্রভাবশালী মন্ত্রী, দুইজন প্রতিমন্ত্রী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সভাপতি ও ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতার লিখিত সুপারিশ ও বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগের প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এরূপ অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সাথে যে সকল প্রার্থী চাকুরীর জন্য মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী মহলের সুপারিশ উত্থাপন করেছে, তাদের আবেদনপত্র বাতিলের জন্য সিএজি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছে টিআইবি|উল্লেখ্য, ৩৬টি পদের জন্য ১৬,০০০ আবেদন পত্র জমা পড়ে, এর মধ্য থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ১০,০০০ জন। এ প্রেক্ষিতে এধরনের হস্তক্ষেপ সকল প্রার্থীর মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করার পথে অন্তরায়, যা ক্ষমতার অপব্যবহারের এক অস্বাভাবিক দৃষ্টান্ত।
এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সিএজি কার্যালয়ে নিয়োগে ৬জন মন্ত্রী, দুইজন প্রতিমন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটির একজন সভাপতি এবং সরকারি দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতা কোন বিশেষ প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ওপর বিভিন্নভাবে অনৈতিক চাপ প্রদান করে চলেছেন, যা খুবই উদ্বেগজনক। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ জাতীয় অসাংবিধানিক ও অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের এই ন্যাক্কারজনক উদাহরণ থেকে এটি সুস্পষ্ট যে, যোগ্যতা ও মেধাসম্পন্ন কর্মী নিয়োগের পরিবর্তে দলীয় ও রাজনৈতিক বিবেচনাই এখন মূখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা সরকারের সুশাসনের রূপকল্প ও ঘোষণার পরিপন্থী।”
তিনি আরো বলেন, “সুপারিশকারী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধি অনুরাগের বশবর্তী না হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের যে সাংবিধানিক শপথ নিয়েছেন তা শুধু ভঙ্গই করেননি, একইসাথে সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষের ওপর অযাচিত রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে তারা সংবিধান পরিপন্থী কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। সংবিধানের ২৯(১) ধারা অনুযায়ী সকল নাগরিকের সমান অধিকারের যে অঙ্গীকার করা হয়েছে তার এরূপ লঙ্ঘন কোন অবস্থায়ই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
বিষয়টি অতীব গুরুতর বিধায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক সিএজি কার্যালয়ে এধরনের প্রভাব বিস্তার অনতিবিলম্বে বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে টিআইবি। একইসাথে সরকারি যে কোন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুপারিশ প্রদানের মতো অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সংস্কৃতি পরিহার করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক মহলের কাছে আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

Media Contact


Press Release