ঢাকা, ১০ নভেম্বর ২০১৪:১৫-১৬ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনের প্রাক্কালে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যা- ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক যৌথ বিবৃতিতে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে জি-২০ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতিতে সংস্থাদ্বয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্বলতা ও নজরদারির ঘাটতির কারণে বিপুল পরিমান অর্থসম্পদ উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে বিনা বাধায় পাচার হয়ে যায়। এর ফলে চূড়ান্ত বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় উন্নয়নশীল দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীসহ সাধারণ মানুষ। জি-২০ নেতৃত্বকে উন্নয়নশীল জনগণের এই অর্থ পাচার রোধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে প্রতি বছর এক ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমান অর্থ অবৈধ উপায়ে পাচার হয়ে যায়। এই ট্রিলিয়ন ডলার কেলেঙ্কারির নায়কদের পরিচয় কদাচিৎ জানা গেলেও তারা এবং যেসব দেশে এ অর্থ পাচার হয় সেসব দেশে পাচারের সহায়ক মহল ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। অতি সাম্প্রতিক কালে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অর্থ পাচারের ফলে লাভবান দেশসমুহে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় নজরদারি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গৃহিত হতে দেখা যায় না।
বিবৃতিতে বলা হয়, “যতদিন পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং এর সাথে যুক্ত সরকার ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা অবৈধ অর্থকে নিরাপদে লুকিয়ে রাখতে সহায়তা করে যাবে, ততদিন পর্যন্ত আরও লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হবে। আমরা আশা করি ব্রিসবেন সম্মেলনে জি-২০ নেতৃবৃন্দ দুর্নীতিবাজদের স্বরূপ উন্মোচনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন।”
বিআইজিডি ও টিআইবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, “জি-২০ নেতৃত্ব কর্পোরেট মালিকানায় স্বচ্ছতা আনয়নের বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়ায় আমরা আশাবাদী। বিশ্বে বর্তমানে বেনামি প্রতিষ্ঠান, গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং অস্বচ্ছ কর্পোরেট মালিকানা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দুর্নীতিবাজরা তাদের পরিচয় গোপন করে কর ফাঁকি দিচ্ছে বা অর্থ পাচার করছে। পাচারকৃত অর্থের উৎস খুঁজে জি-২০ নেতৃত্বকে এইসব দুর্নীতিবাজদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।” অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থ পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে জি-২০ নেতৃত্ব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবেন বিআইজিডি ও টিআইবি এই প্রত্যাশা করছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৭ নভেম্বর শান্তিতে দু’জন নোবেল বিজয়ীসহ বিশ্বের ২৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি অনুরূপ আহ্বান জানিয়ে জি-২০ নেতৃত্বের কাছে একটি খোলা চিঠি প্রেরণ করেছেন।