TIB clarifies its position on ‘Private University’ report (Bangla)
“বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক টিআইবি’র গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে টিআইবি’র অবস্থান
ঢাকা, ২ জুলাই ২০১৪: আজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় খাত নিয়ে টিআইবি’র পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বক্তব্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র দৃষ্টিগোচর হয়েছে। টিআইবি দৃঢ়তার সাথে জানাতে চায় যে“বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক গবেষণাটি আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসরণপূর্বক প্রণীত একটি গুণগত গবেষণা। আলোচিত গবেষণার উদ্দেশ্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হেয় প্রতিপন্ন করা নয় কিংবা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া নয়, বরং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করাই হল এই গবেষণার উদ্দেশ্য।
উল্লেখিত গবেষণার তথ্য প্রাথমিক ও পরোক্ষ উভয় উৎস থেকে সংগৃহীত। পরবর্তীতে প্রতিটি ধাপে সামাজিক গবেষণায় বহুল ব্যবহৃত ট্রায়াঙ্গুলেশন পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের যাচাইকরণ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি তথ্যের অভ্যন্তরীণ সঙ্গতি এবং প্রাপ্ত অপরাপর তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য পরীক্ষার মাধ্যমে তথ্যের গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয় করা হয়। তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ২২টি নির্বাচিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য সংগৃহীত হয়েছে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে দলীয় আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বয়ে পরামর্শ সভা নিয়ে প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই গবেষণায় ব্যবহৃত তথ্যসমূহ চূড়ান্ত করা হয়।
গত ৩০ জুন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কর্তৃক প্রকাশিত“বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে ২২টি নির্বাচিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে আসে। গবেষণার বিভিন্ন তথ্যকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অসত্য বললেও প্রতিবেদনে প্রকাশিত প্রতিটি তথ্য সংশ্লিষ্ট খাতের সাথে জড়িত স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেই সংগৃহীত হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে আরোও বলা হয়েছে এ গবেষণা বিষয়ে টিআইবি মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করেছে বলে তাদের জানা নেই। কিন্তু গবেষণার বিভিন্ন ধাপে একাধিকবার মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা- কর্মচারির সাথে টিআইবি’র গবেষকরা সরাসরি আলোচনা করেছেন। প্রাপ্ত তথ্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে ফোনালাপ এবং এসএমএস এর মাধ্যমে বহুবার যোগাযোগ করা হয়। সর্বোপরি ২৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে মঞ্জুরী কমিশনের পক্ষ থেকে টিআইবিকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিতভাবে তথ্য প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, টিআইবি’র নীতিমালা অনুযায়ী ব্যক্তির দুর্নীতি বা অনিয়ম নিয়ে টিআইবি কোন কাজ করে না বা কোন মন্তব্য করেনা, টিআইবি কেবল প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি উন্মোচনে কাজ করে তাই গবেষণা প্রতিবেদনেও টিআইবি কোন ব্যক্তির বিষয় উল্লেখ করেনি। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, ২২টি নির্বাচিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও অংশীজন এবং সব কর্মকর্তার ক্ষেত্রে আলোচ্য গবেষণার ফলাফল সমানভাবে প্রযোজ্য নয় এবং টিআইবি এক্ষেত্রে কোন সাধারণীকরণের প্রয়াস নেয়নি। তবে টিআইবি’র সংশ্লিষ্ট গবেষণাটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও অংশীজনে বিদ্যমান সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও দুর্নীতির ধরন সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়।
অন্যদিকে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রতিবাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি পর্যালোচনায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তের টিআইবি কমিশনকে সাধুবাদ জানায়। টিআইবি আশা করে সংশ্লিষ্ট কমিটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসনের অভাবের প্রতিকার চাইলে টিআইবি’র উত্থাপিত সুপারিশগুলোকে অবশ্যই আমলে নেবেন।
টিআইবি আরোও আশা করে আলোচ্য প্রতিবেদনকে প্রত্যাখান না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মঞ্জুরী কমিশন উচ্চশিক্ষা নিয়ে চলমান সুশাসনের ঘাটতি থেকে উত্তরণে কালক্ষেপণ না করে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।