TIB against provision of whitening black money (Bangla)
বাজেট ২০১৪-১৫: কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিরুদ্ধে টিআইবি প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য খাতের বরাদ্দে অধিকতর স্বচ্ছতার আহ্বান
ঢাকা, ২৭ মে ২০১৪:কালো টাকা সাদা করার সুযোগের ব্যাপারে দীর্ঘদিনের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এই অসাংবিধানিক, অনৈতিক এবং বৈষম্য সৃষ্টিকারী সুযোগ আসন্ন বাজেটে না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একই সাথে টিআইবি প্রতিরক্ষাসহ সকল খাতের বাজেট বরাদ্দের ব্যাপারে অধিকতর উম্মুক্ততা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে সংসদে ও সংসদের বাইরেও ব্যাপকতর আলোচনার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে।
আজ গণমাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “২০১৪-১৫ সালের জাতীয় বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রদান থেকে বিরত থাকার সরকারি অবস্থানের সংবাদে আমরা আশান্বিত। কোন প্রকার অশুভ চক্রের চাপের মুখে নতি স্বীকার না করে সংবিধানের ২০(২) ধারার সাথে সাংঘর্ষিক এই সুযোগ না প্রদানের জন্য আমরা সরকারকে আবারো আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি। এই অনৈতিক সুযোগ কার্যত অনিয়ম ও দুর্নীতিকে পুরষ্কৃত এবং সততাকে নিরুৎসাহিত করে। এটি একই সাথে সরকারকে দুর্নীতির সংরক্ষক এবং সহায়ক হিসেবে উপস্থাপিত করে।”
ড. জামান আরো বলেন, “কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ যেমন একদিকে নৈতিক অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত তেমনি দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় এটি প্রমাণিত যে এই জাতীয় অসাধু চর্চার ফলে দেশের অর্থনীতি মোটেও উপকৃত হয়না, এমনকি তা কোন প্রকার উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব আদায়েও সহায়ক নয়। অন্যদিকে দুর্নীতির ফলে সুবিধা ভোগকারীদের দ্বারা নীতি কাঠামো কুক্ষিগত হওয়ার ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ আরো বৃদ্ধি পায়।” বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লিখিত অনৈতিক সুবিধা সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ভিশন ২০২১ এবং ৬ষ্ঠ পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনায় বিধৃত নিজস্ব প্রতিশ্রুতির বিরোধী।
একই বিবৃতিতে টিআইবি করদাতাদের তথা সাধারণ জনগণের কাছে উম্মুক্ততা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতের বরাদ্দের ব্যাপারে আরো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশের দাবি জানায়। বার্ষিক জাতীয় বাজেটে অন্যতম শীর্ষ বরাদ্দপ্রাপ্ত খাত হিসেবে কেবল নয়, বরং প্রতিরক্ষা ব্যয়ের উম্মুক্ততা প্রতিরক্ষা খাতের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্যও অপরিহার্য।
ড. জামান বলেন, “প্রতিরক্ষা বাজেটের ব্যাপারে বর্তমান চর্চা অনুযায়ী নাম মাত্র প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে আরো অধিক জানার অধিকার জনগণের রয়েছে, কারণ জনস্বার্থেই জনগণের অর্থ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়িত হয়। প্রতিরক্ষা খাতকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরের খাত হিসেবে বিবেচনা না করে জাতীয় স্বার্থের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে এ ব্যাপারে মুক্ত আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে হবে যেন এ ব্যাপারে অধিকতর জনআস্থা তৈরি হয়। এর ফলে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ব্যাপারে জনসমর্থনও বৃদ্ধি পাবে।”
এছাড়া বিবৃতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বাজেটের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ের অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে জনগণ কর্তৃক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে এজন্য ব্যয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ হালনাগাদ বিবরণী ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সহজে অভিগমনযোগ্য পদ্ধতিতে প্রকাশের জন্য জোর দাবি জানানো হয়।