জাতীয় সংসদে অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণেটিআইবি’র সদস্যদের আহ্বান
ঢাকা, রবিবার, ২৩ জুন ২০১৩: সম্প্রতি জাতীয় সংসদে কতিপয় সদস্য কর্তৃক অসংসদীয় ও অশ্রাব্য এবং আক্রমণাত্মক ভাষায় পরস্পরকে আক্রমণের ঘটনার ক্রমবৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর সদস্যরা অনতিবিলম্বে সংসদের পবিত্রতা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার (২২ শে জুন) বিয়ামে অনুষ্ঠিত টিআইবি’র সদস্যদের বার্ষিক সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে বার্ষিক সভায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠন, জাতীয় সংসদকে কার্যকর, স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থাও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যকর ভূমিকা এবং মানবাধিকার সংরক্ষণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপসি'ত ছিলেন টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এবং ট্রাস্টি অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা: মো. নুরুদ্দিন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। সভায় বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন সচিব এবং টিআইবি’র সদস্য এ এম আহসান উল্লাহ এর মৃত্যুতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল তাঁর বক্তব্যে জাতীয় সংসদের ভাবমূর্তি রক্ষার জোর দাবি জানিয়ে বলেন “সংসদে যারা আছেন তাদের কোন অধিকার নেই একে অপবিত্র করার। আমরা নাগরিকরা সংসদ সদস্যদের সে অধিকার দেইনি।” তিনি দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে তরুণদের অধিকতর সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “জাতি হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝে আমি সবসময়ই স্বচ্ছতা ও সুনীতির প্রতীক খুঁজে পাই। আমি বিশ্বাস করি দুর্নীতি’র বেড়াজাল থেকে বাংলাদেশ একদিন বের হয়ে আসবেই।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের কার্যক্রমে জনম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে টিআইবি আগ্রহী শিক্ষার্থী, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ নাগরিককে সদস্যভুক্ত করে আসছে। বার্ষিক সদস্য সভা ছাড়াও ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত সদস্য দিবসে অংশগ্রহণ করে তারা টিআইবি’র কর্মসূচি সম্পর্কে মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বর্তমানে টিআইবি’র সদস্য সংখ্যা ৩২৫।
বার্ষিক সদস্য সভা শেষে এক ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। এতে দুর্নীতি দমনে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরী; পদ্মা সেতু নির্মাণে স্বচ্ছতা ও জাতীয় সম্পদ ব্যবহারে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ; সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সাম্প্রতিক সংশোধনীর মাধ্যমে পুলিশী ক্ষমতার অপপ্রয়োগের সুযোগে উদ্বেগ প্রকাশ; আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ; বিনিয়োগের নিরাপত্তা ও সিন্ডিকেটের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ; নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার কার্যকর উদ্যোগ; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাশক্তিশালীকরণ; এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের জোর দাবি জানানো হয়।