ঢাকা ২২ এপ্রিল ২০১২: সংবিধানে অঙ্গীকারাবদ্ধ জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন সংস্থার সামর্থ্যের ক্রমবর্ধমান ঘাটতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য অপরিহার্য মৌলিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে আইন প্রয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার ওপর অবিলম্বে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘সাম্প্রতিককালে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকা- বা গুম হবার মত ঘটনায় রাজনৈতিক ও গণমাধ্যমব্যক্তিত্বসহ সাধারণ জনগণের ‘ভিকটিম’ হিসেবে পরিগণিত হওয়া এবং তার প্রতিকারের সুনির্দিষ্ট লক্ষনের অভাবে এটা সুষ্পষ্ট যে, আইন প্রয়োগে নিয়োজিত সংস্থাগুলি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব প্রত্যাশিতভাবে পালন করতে পারছে না।’’
বিশেষ করে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব, স্বার্থের দ্বন্দ্ব, দুর্নীতি এবং কালোটাকার দৌরাত্ম্যের ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলির পক্ষে পেশাগত দক্ষতা ও তৎপরতার সাথে দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক সাম্প্রতিক সময়ে রেলওয়েতে নিয়োগ বাণিজ্য এবং পদ্মা সেতুর ব্যাপারে স্বার্থের দ্বন্দ্ব সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোন প্রকার প্রভাবমুক্ত হয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে কঠোর ও সুষ্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতাকে ‘‘দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তারের ফলে দুর্নীতি কর্তৃক রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের একটি অশুভ লক্ষন’’ বলে চিহ্নিত করেন, যা সরকারের জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় যেমন আত্মঘাতী, তেমনি দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতার পরিচায়ক।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রেলওয়েতে নিয়োগ সংক্রান্ত কলংকময় ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ভূমিকা সম্পর্কে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত অপরিহার্য। বিজিবি কোন প্রেক্ষিতে, কারো নির্দেশে বা প্রভাবে বা কোন লেনদেনের ফলে বা কারো দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা রেখেছিল কি না তার সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া উক্ত দুর্নীতির প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে না।
একই সাথে রেলওয়ের ঘুষ কেলেংকারীরর ঘটনায় নিখোঁজ গাড়ি চালকের ব্যপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাকে খুঁজে বের করে তার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সকল কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বিবৃতিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
ক্রমবর্ধমান সংকটের মূলে যে সাংঘর্ষিক ও নেতিবাচক রাজনীতি, তার ঊর্ধ্বে উঠে দেশের জনগণের স্বার্থে ও গণতন্ত্রের স্বার্থে সকল রাজনৈতিক নেতৃত্ব, বিশেষ করে দুই বৃহত্তম দলের নেতৃত্বের প্রতি আইনের শাসনের প্রতিষ্ঠায় আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমতে পৌঁছাবার আহ্বান জানায় টিআইবি।