বাজেটে কালো টাকাকে আবারো বৈধতা দানের পক্ষে সরকারের ঘোষিত অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়েছে টিআইবি।
এ পদক্ষেপ অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও নির্বাচনী অঙ্গীকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন
ঢাকা, সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১২: গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকাকে আবারো বৈধতা প্রদানে সরকারি অবস্থানের প্রেক্ষিতে জোরালো প্রতিবাদ, গভীর বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।
এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘কালো টাকা সাদা করার বিধান অসাংবিধানিক, নির্বাচনী অঙ্গীকারের পরিপন্থী, অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক।মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও অর্থসচিবের বক্তব্যে প্রবাসী আয় এবং মুনাফা অর্জনকে ঢালাওভাবে কালো টাকাকে উৎসাহিত করার কারন হিসেবে চিহ্নিত করা অযৌক্তিক। বিশেষ করে ‘কালো টাকার সাথে দুর্নীতির কোন সম্পর্ক নেই’ অর্থসচিবের এরূপ মন্তব্য দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।”
তিনি আরো বলেন, “সরকারের দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে এরূপ বক্তব্যের পিছনে সুস্পষ্ট বিশ্লেষণ থাকা উচিত, বিশেষ করে কালো টাকা বৈধ করায় কারা সুবিধা পেয়েছে এবং এরূপ সুবিধার ফলে যে পরিমান অর্থ বৈধ করা হয়েছে তার কতভাগ প্রবাসী আয়? তাছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যে মুনাফা অর্জন অবৈধ উপায়েই করতে হবে এমন বক্তব্যেরও যেমন কোন ভিত্তি নেই তেমনি এর মাধ্যমে বাস্তবে সমাজে সর্বস্তরে দুর্নীতিকে আরো প্রসারিত করার উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। আর অন্যদিকে সৎ ও বৈধভাবে উপার্জনকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, যা বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের সাথে সাংঘর্ষিক।”
সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদে অনুপার্জিত আয়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান ঘোষিত হয়েছে।বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারের পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক বিষয়ের দ্বিতীয়টিতে সুস্পষ্টভাবে কালো টাকা ও অবৈধ আয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান ঘোষিত হয়েছিল।নির্বাচনী অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে ব্যর্থতা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, “স্বার্থান্বেষী মহলের চাপে প্রণোদনার নামে শেয়ার বাজারের মত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে, এবং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রভাবশালীদের দ্বারা শেয়ারবাজার পরিপূর্ণ দখলের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় কালোটাকা নিয়ন্ত্রণ ও নিরুৎসাহিত করা সম্ভব নয় বলে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য দুর্নীতির মতো ব্যাধির কাছে রাজনৈতিক পরাজয়ের দুষ্টান্ত। এরূপ আত্মঘাতী অবস্থানের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে দুর্নীতির ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার বন্ধ করার লক্ষে কার্যকর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কালো টাকাকে বৈধ করার সুযোগ বন্ধ করার জোর দাবি জানিয়েছে টিআইবি।