চির সবুজের দেশ, প্রিয় স্বদেশ
চাই টেকসই সবুজ-বান্ধব উন্নয়ন
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও রিও+২০ জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সম্মেলন উপলক্ষে
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন নেটওয়ার্ক (সিএফজিএন) এবং
বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন) এর আবেদন
১. জলবায়ু অর্থায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন: জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অর্থ বরাদ্দ, বিতরণ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় দেশেই স্বচ্ছতা ও জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
২. সবুজ জলবায়ু তহবিলকে দুর্নীতি থেকে সুরক্ষা প্রদান: বিশেষ করে জাতিসংঘ প্রতিশ্রুত সবুজ জলবায়ু তহবিলের গঠন ও ব্যবহারের ভিত্তি হতে হবে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতি।
৩. ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমের (সিডিএম) আওতায় স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন: পরিচ্ছন্ন উন্নয়ন কৌশলের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের, বিশেষ করে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দেশের সরকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে প্রকল্প প্রণয়ন, নির্বাচন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে।
৪. বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং অবৈধ কাঠ পাচার বন্ধ করা: কার্যকরভাবে বন উজার বন্ধ ও প্রতিরোধ, বনের টেকসই ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও পুনরূদ্ধার এবং সকল জীববৈচিত্র্য বিশেষত ‘রামসার এলাকা’ (Ramsar Site), UNESCO কর্তৃক ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট যেমন; সুন্দরবনের পরিবেশগত, সুশাসন এবং সামাজিক সুরক্ষায় সর্বোচ্চ মানদ- নিশ্চিত করতে জবাবদিহিমূলক নীতি কাঠামো প্রয়োজন। কোনো ধরনের পরিবেশগত প্রভাব যাচাই (ইআইএ) ছাড়াই সুন্দরবনের বাফার জোনের একাংশে বিপিডিবি এবং এনটিপিসি কর্তৃক যৌথভাবে প্রস্তাবিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে অন্য যে কোন সুবিধাজনক স্থানে তা বাস্তবায়নের দাবি করছি।
৫. জলবায়ু তহবিলের দ্রুত ছাড়: উন্নত দেশসমূহ কর্তৃক প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিলের দ্রুত ছাড়করণ নিশ্চিত করতে হবে এবং এই তহবিল হতে হবে নতুন এবং উন্নয়ন তহবিলের অতিরিক্ত।
৬. জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়ন এবং জবাবদিহিতা: জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়ন এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. জলবায়ু অর্থায়ন নীতিমালায় প্রতিবন্ধী, নারী ও শিশু: জলবায়ু অর্থায়ন নীতিমালায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের প্রতিবন্ধী, নারী ও শিশুদের বিশেষ চ্যালেঞ্জের প্রতি সংবেদনশীলতার প্রতিফলন থাকতে হবে।
৮. জলবায়ু অর্থায়নে রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসান: জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড ও রেজিলিয়েন্স ফান্ডসহ বাংলাদেশে জলবায়ু সংক্রান্ত সকল তহবিল নীতিমালায়, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সকল প্রকার রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বার্থের দ্বন্দ্বের অবসান করতে হবে। এক্ষেত্রে জনগণের বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ও জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে।
৯. জলবায়ু তহবিলের স্বচ্ছতা: রেজিলিয়েন্স ফান্ড ও ট্রাস্টফান্ডসহ সকল জলবায়ু তহবিল থেকে অনুমোদিত ও ছাড়কৃত সকল অর্থের পরিমাণ ও প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে (Publish what you fund)
১০. জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থায় স্বাধীন তদারকি কমিশন: সকল জলবায়ু তহবিলের অর্থসম্পদ ব্যবহারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও কার্যকরিতা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন তদারকি কমিশন গঠন করতে হবে।