TIB recommends for formulating national implementation strategy for RTI (Bangla)

তথ্য অধিকার আইনের জন্য জাতীয় বাস্তবায়ন কৌশল প্রণয়নের সুপারিশ

ঢাকা, ৩০ জুলাই, ২০১১ : শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিশ্চিতকরণ এবং গোপনীয়তার সংস্কৃতি পরিহার করে স্বচ্ছতার সংস্কৃতিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি জাতীয় বাস্তবায়নকৌশল নির্ধারণ পূর্বক তথ্য অধিকার আইেনর কার্যকর বা স্তবায়নের সুপারিশ করেছেটিআইবি। ‘‘তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশিষ্ট সকলের হলেও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কার্যকরভূমিকা সরকারকেই পালন করতে হবে’’ উল্ল্যেখ করে আজ ঢাকায় আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে অভিমত প্রকাশ করেনটিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আরো বলেন, যে সব দেশে তথ্য অধিকার আইন কার্যকর হয়েছে সেসবদেশ দুর্নীতি প্রতিরোধে সফলতা অর্জন করেছে।

সকালে সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘তথ্য অধিকার: বাস্তবায়নে ঝুঁকি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেনটিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল ও সদস্য এম. হাফিজউদ্দীন খান।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিছিলেন প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ জমির। বিশেষ অতিথিবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটসইনিশিয়েটিভ (সিএইচআরআই) এর পরিচালক মায়া দারুওয়ালা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও তথ্য অধিকারফোরাম বাংলাদেশের আহ্বায়ক শাহীন আনাম এবং তথ্য অধিকারকমিশনার ড.সাদেকা হালিম। টিআইবি ও সিএইচআরআই যৌথদ্যোগে প্রকাশিত ‘তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়ন: প্রায়োগিকনির্দেশিকা’ প্রকাশনার আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়গোলটেবিল বৈঠকে।

তথ্য অধিকার আইন বা স্তবায়নের চ্যালেঞ্জের উপর এক উপস্থাপনায় ড.ইফতেখারুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে বলেন,২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইনটি সমাজ ও প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেবলে দেশের জনগণ আশা করেবাংলাদেশেতথ্য অধিকার আইনের বা স্তবায়নে তথ্য কমিশন সহ কয়েকটি এনজিও’র গৃহীত বিভিন্নদ্যোগের উল্ল্যেখ করে জানানো হয় আইনটির কার্যকর বা স্তবায়নের ক্ষেত্রেজাতীয় কৌশল অনুপ স্থিত থাকায়বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরিহয়েছে। তথ্য অধিকার আইন বা স্তবায়নের পথে তিনি তিনটি প্রধান বাধা চিহ্নিত করেন। এ গুলো হলো: একটি জাতীয় বাস্তবায়নকৌশলের অনুপস্থিতি, তথ্য কমিশনের বিবিধ সীমাবদ্ধতা এবং তথ্যঅধিকার আইনের অনুকূলে সহায়ক তথ্য প্রদান ও তথ্য দাবীরপরিস্থিতির অনুপস্থিতি। ১২টি দেশের একটি তালিকার উল্ল্যেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য অধিকার আইন কার্যকর বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে উক্ত দেশ গুলোর দুর্নীতির ধারণা সূচকে উল্ল্যেখযোগ্যঅগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। তথ্যের গোপনীয়তার সংস্কৃতিথেকে উন্মুক্ত তথ্য ব্যবস্থার উত্তরণের জাতীয় বাস্তবায়ন কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে তথ্যযোদ্ধার সৃষ্টি, তথ্য কর্মকর্তার নিয়োগ, বাস্তবায়ন ইউনিট গঠন এবং তথ্য কমিশনের সার্বিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক। এ ছাড়া তথ্যদাতাদের প্রশিক্ষণ, তথ্য অধিকার আইনেরসাথে সাংঘর্ষিক আইনসমূহ বাতিল, তথ্য ব্যবস্থা ও রেকর্ড সংরক্ষণের আধুনিকায়ন এবংতথ্য দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে পার্টনারশিপ গঠনের সুপারিশ করাহয়। আলোচনায় বক্তারা তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে জনগণকেসচেতন করা এবং কিভাবে তথ্য চাইতে হবে সে বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলা কে তথ্য অধিকার আইন বা স্তবায়নে অন্যতমপ্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেন।

সুলতানা কামাল বলেন, দেশে তথ্য অধিকার আইন যেমন জনগণের দাবীতে অর্জিত হয়েছে, তেমনি তা আমাদেরকেই বা স্তবায়নেচাহিদা সৃষ্টি করতে হবে।স্বৈরতান্ত্রিক সরকার মনে করে জনগণ যত কম জানবে ততই তারজন্য ভালো। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়তা করলে হবে না। আমাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে বা সাংগঠনিকভাবে তথ্য চাইতে হবে।

শাহীন আনাম বলেন,সুশীল সমাজের দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার তথ্যঅধিকার আইন বা স্তবায়ন করেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে এসম্পর্কে জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কারণ তারা আইনটি সম্পর্কেনা জানলে তা কোনো কাজেআসবে না।এ জন্য সরকারি,বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনগণের সম্মিলিত প্রয়াসে আইনটি বাস্তবায়ন করতে হবে।এ ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তাদেরকেও প্রশিক্ষণেরমাধ্যমে সম্যক ধারণা প্রদান করতে হবে।

মায়া দারুওয়ালা সুশীল সমাজের ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সরকার ও সুশীল সমাজকে এ আইন বাস্তবায়নে একযোগেকাজ করতে হবে। এ জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্র স্তুত থাকতে হবে।

ড. সাদেকা হালিম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তথ্য অধিকার কমিশন আইনানুযায়ী স্বাধীন হলেও বাস্তবে তা নয়। আমাদের একারপক্ষে দেশের সকল তথ্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষপ্রদান করা সম্ভবনয়। অন্যদের সহায়তা প্রয়োজন। সরকারের সদিচ্ছা এবং আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সভায় এ আইন বা স্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সেইসাথে সকল রাজনৈতিক দলকেও একই প্যাটফর্মেএসে সহযোগী মনোভাব থাকতে হবে।

প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ জমির বিচারিক প্রক্রিয়াকে তথ্য অধিকার আইনের আওতাভুক্ত করে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিতথ্য অধিকার বা স্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে আহ্বান জানান।এ ছাড়াও তিনি প্রিন্ট মিডিয়াতে তথ্য অিধকার বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশেরজন্য অনুরোধ করেন, যা আইনটি বা স্তবায়নেসহায়ক হিসেবে কাজ করবে তিনি মনে করেন।

আলোচ্য বইটিতে কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশসমূহে যেমন: ভারত,যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জ্যামাইকা সহ বিভিন্ন দেশেধাপে ধাপে তথ্য অধিকার আইনের বা স্তবায়নের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে প্রায়োগিক নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।এ ছাড়াটিআইবি সহ বিভিন্ন বেসরকারি সং স্থার অভিজ্ঞতালবদ্ধ তথ্যঅধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে

Media Contact


Press Release