র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের ওপর ‘র্যাবের সোর্স’ - এর আক্রমনে টিআইবি উদ্বিগ্ন;
বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপেরে মাধ্যমে নিরাপত্তা দাবি
ঢাকা, ২২ আগস্ট ২০১২: র্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির কলেজ ছাত্র লিমন হোসেন ও তার মায়ের ওপর ঈদের দিন ‘র্যাবের সোর্স’ ও তার লোকজনের হামলায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসাথে ঈদের ছুটির আগের দিন স্থানীয় রাজাপুর পুলিশ কর্তৃক লিমনের মায়ের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের অব্যাহতির সুপারিশ সম্বলিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনকে একদিকে ষড়যন্ত্রমূলক ও অন্যদিকে একজন সাধারণ নিরপরাধ নাগরিকের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নির্লজ্জ ব্যর্থতার দৃষ্টান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে টিআইবি।
২৩ মার্চ ২০১১ তারিখে র্যাব কর্তৃক লিমনের ওপর আক্রমন থেকে শুরু করে পুরো বিষয়ের ওপর সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছে টিআইবি। একই সাথে টিআইবি সরকার প্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে লিমন ও তার পরিবারের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং লিমন ও তার পরিবারের পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে নিয়োজিত র্যাব ও পুলিশের একাংশের হাতে লিমনের মত নিরপরাধ নাগরিকের ওপর যেভাবে নৃশংস আক্রমন করে তার সম্ভাবনাময় জীবনকে বিনষ্ঠ করে দেয়া হয়েছে তা দেশবাসীর মনে গভীর ক্ষোভের সঞ্চার করেছে যা সর্বজনবিদিত। শুধু তাই নয়, এ ঘটনার মূল অপরাধ ও অপরাধীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে নিষ্ঠুর নাটকীয়তার আশ্রয় নিয়ে যেভাবে লিমন ও তার পরিবারের নিরাপদে জীবন-যাপন ও ন্যায় বিচারের অধিকার হরণ করা হচ্ছে তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও বিশেষ করে আইনের শাসনের সম্ভাবনার জন্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও হুমকি স্বরূপ।”
তিনি আরো বলেন, “লিমন ও তার পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের দৃশ্যমান এই সন্ত্রাসী আচরণ রোধকল্পে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ দাবি করছি। আমরা র্যাব ও পুলিশের প্রভাবমুক্ত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্যভাবে পুরো ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই। একই সাথে লিমন ও তার পরিবারের পরিপূর্ণ নিরাপত্তাসহ তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছি। বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। লিমন ও তার পরিবারের ক্ষতিপূরণের দায়িত্বও সরকারকে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকার ও বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কারো প্রতি ভয় বা করুণার উর্দ্ধে থেকে লিমনের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন, এই প্রত্যাশা এদেশের জনগণের।”