ধর্মীয় স্থাপনাসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় বিশিষ্ট নাগরিকদের নিন্দা প্রকাশ
বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
ঢাকা, অক্টোবর ১, ২০১২: গত শনি ও রবিবার রাতে রামু, টেকনাফ, উখিয়া এবং পটিয়ায় পবিত্র বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত বর্বরোচিত হামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে এর বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন দেশের ৯জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, “ধর্মীয় পবিত্র স্থাপনা ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নগ্ন আক্রমনের এ জাতীয় ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমঅধিকারে অঙ্গীকারাবদ্ধ বাংলাদেশে এ জাতীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর নারকীয় আক্রমন কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
তাঁরা আরো বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও সর্বোপরি আমাদের স্বাধীন জাতিসত্ত্বার মূল ভিত্তির ওপর এটি অগ্রহণযোগ্য ও অমার্জনীয় আঘাত। সরকারি বেসরকারিসহ বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে ঘটনাগুলো পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক বিবেচিত হওয়ায় আমরা আরো বেশী উদ্বিগ্ন এ হামলা শুধু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপরই নয়, বাংলাদেশের আত্মপরিচয়ের ওপর অগ্রহণযোগ্য চ্যালেঞ্জ।”
ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এসব ঘটনার প্রশাসনিক তদন্তের পাশাপাশি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রভাবমুক্ত তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান স্বাক্ষরদানকারীগণ, যাতে ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এই ঘটনায় যথাযথ দায়িত্ব পালন না করে থাকলে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
বিবৃতিতে বৌদ্ধ পল্লীতে এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণসহ ধ্বংসপ্রাপ্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অনতিবিলম্বে পরিপূর্ণ পুনঃস্থাপন ও নির্মানের যাবতীয় ব্যয়ভার সরকারিভাবে নির্বাহের দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরপ্রদানকারী নাগরিকবৃন্দ হলেন: সুলতানা কামাল, নির্বাহী পরিচালক, আইন ও সালিশ কেন্দ্র; খুশি কবীর, সমন্বয়ক, নিজেরা করি; শাহিন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন; এরোমা দত্ত, নির্বাহী পরিচালক, প্রিপ ট্রাস্ট; রোকেয়া কবীর, সভাপতি, এডাব; তাজুল ইসলাম, সভাপতি, এফএনবি; ফারাহ কবীর, কান্ট্রি ডিরেক্টর, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ; রাশেদা কে. চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, গণসাক্ষরতা অভিযান এবং ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি।