দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের ক্ষমতা সরকারের হাতে অর্পণের উদ্যোগের প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানিয়েছে টিআইবি
ঢাকা, নভেম্বর ২২, ২০১২, বৃহস্পতিবার: ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ফৌজদারী আইনের ধারা সংশোধন করে মামলা প্রত্যাহারের ক্ষমতা দুদকের কাছ থেকে সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছে হস্তান্তরের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের পরিপন্থী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,“সরকার কোনভাবেই দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে দেশকে প্রাধান্য দিয়ে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতি দমনে দৃঢ় ও কঠোর হতে পারছেন না এই সিদ্ধান্ত তারই সুষ্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে। রাজনৈতিক বিশেষ করে দলীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের জন্য দুদকের ক্ষমতা খর্ব করার এই ঘৃণ্য প্রক্রিয়া ন্যায়বিচার, সুশাসন ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমাদের সাংবিধানিক অবস্থান ‘আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান’ ও ২০০৪ সালে সংশোধিত ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট এর ধারা ১০ ও উপধারা ৪ এর পরিপন্থী।”
তিনি আরো বলেন, উদ্যোগটি স্বার্থের দ্বন্দ্বের সুষ্পষ্ট প্রমান, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দলীয় বিবেচনাপ্রসূত। দুর্নীতি প্রতিরোধে ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দুদকের কর্মকান্ডের স্বাধীনতা ও সর্বময় ক্ষমতা প্রদান যখন বহুল আলোচিত ও কাঙ্ক্ষিত ঠিক তখনই সরকার এরূপ নেতিবাচক একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নেমেছেন যা দুর্নীতি প্রতিরোধের তার নির্বাচনী অঙ্গীকারে দৃঢ় অবস্থানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং তা জনমনে সরকারের প্রতি আস্থাহীনতার জন্ম দিচ্ছে। দুর্নীতির কোন মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে কি না যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তার যথার্থতা প্রমাণিত হওয়া প্রয়োজন। সরকারকে এই আত্মঘাতী ও বিতর্কিত উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।
অন্যদিকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি দমন আইন ২০০৪ কে সংশোধন করে দুদকের ক্ষমতা সুদৃঢ়তর করার লক্ষ্যে খসড়া হিসেবে অনুমোদিত সংশোধনী সংসদে উত্থাপিত না হওয়া এবং এ সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ না করাও উদ্বেগ ও সন্দেহজনক মনে করছে টিআইবি। অনতিবিলম্বে খসড়া সংশোধনীসমূহ প্রকাশ ও তা সংসদে উত্থাপনের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।