প্রকাশকাল: ১৫ জুলাই ২০১২
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রতিবেদন
কিছুদিন ধরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মানবাধিকার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলেছ। আমরা পত্রপত্রিকা মারফত যে প্রতিক্রিয়াগুলো পাচ্ছি, সেগুলো মূলত সরকারপক্ষীয় ব্যক্তিদের, যেমন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইন প্রতিমন্ত্রী। অন্যান্য ব্যক্তিও এ বিষয়ে লিখছেন এবং কথা বলছেন। ১২ জুলাই প্রথম আলোয় প্রকাশিত সাবেক উপাচার্য আবদুল মান্নানের এক লিখার শিরোনাম ছিল—‘বাংলাদেশ কি সার্কাসের তাঁবু হয়ে গেল?’
১২ জুলাইেয়র দৈনিক ইনকিলাব-এ এক সংবাদে বলা হয়েছে যে এক আলোচনা সভায় আইন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি), অধিকার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রর (আসক) মতো যারা দুর্নীতি ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, সেই সব সংস্থার তহিবল কোত্থেকে আসে, তা খুঁজে দেখতে হবে।
তাদের সততা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করারও সময় এসেছে।’ তিনি আরও বলেছেন, দেশকে অকার্যকর ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন ও এনজিওদের নিয়ে দেশীয় এক মহল দেশের ভেতরে ও বাইরে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছ। এসব সংগঠন ও এনজিওকে বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। আইন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পত্রিকানুযায়ী,‘বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুকের ওপর পুলিশ যে নিন্দনীয় আচরণ করেছে, তা আমি স্বীকার করি। বিরোধী দলের হরতালের ক্ষেত্রেও অনেক সময় পুলিশ নিন্দনীয় আচরণ করে। তবে আন্দোলনকারীরাও ঠিকমতো আচরণ করেন না’ (ইনকিলাব, ১২/০৭/১২)।
যেহেতু টিআইবি এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র দু সংগঠেনরই নীতিনির্ধারণীর দায়দায়িত্বে আমার এক মুখ্য ভূমিকা আছে, তাই এ বিষয়ে কিছু আলোকপাত করার নৈতিক দায়িত্বেবাধ থেকেই আমার কলম ধরা। প্রথমেই আসি আইন প্রতিমন্ত্রীর কথায়। তাঁকে বিনয়ের সাথে অবহিত করতে চাই, আইন ও সালিশ কেন্দ্র আজ প্রায় ২৬ বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে। এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর কাছে যথাবিধি তথ্য সরবরাহ করে ছাড়পত্র পাওয়ার পরই আইন ও সালিশ কেন্দ্র তার কাজ করার অনুমতি পায়। প্রতিমন্ত্রী মহোদয় এসব দপ্তরের কাছ থেকেই আইন ও সালিশ কেন্দ্র কোথা থেকে অর্থ জাগাড় করেছে, কী কাজ করেছ, কেন করেছ—সব তথ্য পেয়ে যাবেন। টিআইবি সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। এর পরে আসি, ‘দেশকে অকার্যকর ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা’ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর কথায়। প্রথম কথা, আসক কাজ করে মানবাধিকার নিয়ে, যার জন্য তাকে যথাসময়ে সরকার ও রাষ্ট্রের মানবাধিকারবিরাধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়। সরকার ও রাষ্ট্রের সাথে কখনো কখনো সাংঘর্ষিক সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। কারণ, রাষ্ট্র ও সরকারেরই মূল দায়িত্ব জনগেণর মানবাধিকার রক্ষা করা। সেটা যখন ঘটে না, তখন সোচ্চার হওয়াটা মানবাধিকারকর্মীদের নৈতিক দায়িত্ব। মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার চাইলেই যদি একটি দেশ অকার্যকর হয়ে পড়ে, তাহলে আমাদের ভাবিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আসক যা করে, তা সাধারণ মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়ে মানবাধিকার সংরক্ষণের দাবিতেই করে এবং তা আমরা করেই যাব মানবাধিকারের প্রতি আমাদের অঙ্গিকার থেকে। এতে সরকার বা সরকারের বাইরে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর বিরাগভাজন হতে হলেও সততা, ন্যায় তা এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে আমাদের তা অব্যাহত রাখতেই হবে।
এবার আইন প্রতিমন্ত্রীর যুদ্ধাপরাধ-সংক্রান্ত মন্তব্যে আসি। তিনি হয়তো অবগত নন যে যুদ্ধাপরাধের বিচার- সংক্রান্ত কাজ যখন সূচনাপর্বে, সেই ১৯৯০ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত গণ-আদালতের প্রস্তুতির সময়ে যুদ্ধাপরাধ-সংক্রান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন, কনেভনশন, অন্যান্য বিধিবিধান-সংবিলত গবেষণালব্ধ তথ্যই বেগম সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে যে গণতদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছিল, তার প্রতিবেদনটির মূল ভিত্তি ছিল।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সঙ্গে যে শুধু ঘনিষ্টভাবে যুক্ত ছিল তা-ই নয়, নির্মূল কমিটি ও তদন্ত কমিশনের সব কর্মকান্ডে অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে এবং শেষ পর্যন্ত করবে। প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে একটু স্মরণ করিয়ে দিই, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাজ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে আমি আসকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে ট্রাইব্যুনালের কাছে আসক পাঠাগারে সংরক্ষিত বিচার-সহায়ক সব তথ্য ও পুস্তক জমা দি। তাই প্রতিমন্ত্রীর যে আশঙ্কা, আসক সেই সব এনজিওর একটি , যারা যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল করতে চায়, তা নিতান্তই অমূলক। তবে মানবাধিকার রক্ষার জন্য এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ করার জন্য যদি বিচারের দাবি তোলে কোনো সরকার, তাকে আর যা বলা যায়, কেউ গণতান্ত্রিক বলবে বলে মনে হয় না। দয়া করে বাংলাদেশ নামের মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করা এক জাতির মুখে এই কালিমা লেপন করবেন না। টিআইবির যে সচেতন নাগিরক কমিটি আছে, তারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের সমর্থনে কাজ করে থাকে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে যদি একটি দেশ অকার্যকর হওয়ার শঙ্কায় ভোগে, প্রতিমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসা, তা কেন হবে?
এবার আসি প্রতিমন্ত্রীর পুলিশের আচরণ-সম্পর্কিত মন্তব্যে। তিনি স্বীকার করেছেন, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুকের ওপর পুলিশ নিন্দনীয় আচরণ করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, সরকারের একজন দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে তিনি কি সে জন্য একবারও দুঃখ প্রকাশ করেছেন? কিংবা নিন্দনীয় আচরণকারী পুলিশের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? বরং তাঁর আরও পদোন্নতি এবং একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছন, বিরোধী দলের হরতালের ক্ষেত্রে অনেক সময় পুলিশ নিন্দনীয় আচরণ করে, তা সেই আচরণ যে নিন্দনীয় তা পুলিশকে জানানো হয় কার্যকরভাবে। আমরা জনগণ কি জানতে পারি যে আমাদের ভোটে নির্বাচিত সরকার তার নিয়োজিত বাহিনীকে সৎ পথে পরিচালিত করছে?
এর পর আসি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন-সংক্রান্ত কথায়। আমরা জানিয়েছি যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আমাদের কাছ থেকে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছে, যেটা আমাদের প্রকাশিত তথ্য, যা নিয়ে আমরা ২০০৪ সাল থেকে কথা বলে আসছি, বই প্রকাশ করছি, পত্রিকায় লিখছি। তাদের প্রতিবেদনের উপসংহারে তারা যে সুপারিশ রেখেছ, সেটা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেটার ব্যাখ্যা তারা দেবে। আসক বরাবরই র্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডকে নিন্দা জানিয়ে এসেছে এবং তা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, সন্ত্রাসীরা ক্রসফায়ারে নিহত হলে সাধারণ মানুষ খুশি হয়। এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী নিহত বা খুন নিয়ে পশ্ন তোলেন। লক্ষ্যণীয় যে, তিনি কিন্তু বলেননি এটা খুন নয়। সন্ত্রাসীরা যখন খুন করেছ, তখন আমরা কিছু বলি না। তিনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। বাংলাদেশ সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রী। তিনি নিশ্চয় সাধারণ অপরাধ, যা খুবই গুরুতর হতে পারে এবং মানবাধিকার ইস্যুর মধ্যে পার্থক্য বোঝেন। আমরা যারা মানবাধিকারকর্মী , আমাদের দায়িত্ব কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কথা তোলা। খুন, জখম, রাহাজানি, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধের বিচার ও অপরাধীর শাস্তি হওয়ার ববস্থা করার দায়িত্বে কিন্তু দেশের সরকার ও তার পুলিশ, আইন-আদালত রয়েছে। যথাযথভাবে পালিত হয় না বলেই অপরাধীরা এত দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেত পারে। আমরা কখনোই অপরাধীর বিচারের বিরুদ্ধে কিছু বলি না; রাষ্ট্রীয় বাহিনীর আইন, বিচার ও সংবিধানবহির্ভূত আচরণের নিন্দা জানিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক, র্যাবকে তার স্বীকৃতি ও সাংবিধানিক আইনী পরিধির মধ্যে কাজ করানোর দাবি জানিয়েছি।
হয়তো আইন প্রতিমন্ত্রী ভুলে গেছেন যে তাঁর দল বিরোধী দলে থাকতে র্যাবের এহেন আচরেণর নিন্দা জানিয়েছিল এবং ক্ষমতায় এলে বিচারবিহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করবে বলে নির্বাচনী ইশেতেহারে অঙ্গীকার করেছিল। তাঁরা তাঁদের কথা না রাখতে পারেন, এখন র্যাবের কর্মকান্ডের পৃষ্ঠপোষকতাও করতে পারেন, কিন্তু জবাবদিহিতা এড়াবেন কী করে? আসক বন্ধ হয়ে যেতে পারে, আমি ব্যক্তি সুলতানা কামাল স্বাভাবিক নিয়মেই একিদন থাকব না, ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে, এ জাতি সন্ত্রাস দমনের নামে কী করেছে, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকারের আমলে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা কি পরম পরাক্রমশালী ছিল না? তারা কি তদানীন্তন সরকারগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা আর সমর্থন পায়নি? ইতিহাস ক্ষমা করেছে তাদের? ক্ষমা করেছে সভ্যতা? তার বেঁচেও থেকেছে খুনি পরিচয়ে, মারাও গেছে খুনি পরিচয়ে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে রথী-মহারথীরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হয়নি?
আগেও বলেছি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সুপারিশের সঙ্গে আমাদের দাবির কোনো মিল নে। আবদুল মান্নান তাঁর লেখায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনের মূল কথার সত্যতা কিছুটা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তারা যে বাংলাদেশ বসে এ দেশের কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলে গেছে, সেই ঘটনার তিনি নিন্দা জানিয়েছেন। একটি দেশে এসে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা কথা বললে সেটা সেই দেশকে উপনিবেশ বলে ধরে নেওয়া হয় কি না জানি না। কারণ, আন্তর্জাতিক বলেলই সেটা কোনো দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, সর্বজনীন সংস্থার মর্যাদা পায়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সে রকম একটি সংস্থা এবং আমাদের গর্বের। বন্ধু আইরিন খান, যিনি বাংলাদেশের সন্তান, যখন যুক্তরাষ্ট্র অথবা যুক্তরাজ্যে কিংবা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়ে তাঁদের রাষ্ট্র পরিচালক অথবা সাধারণ জনগণ, মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে সেই দেশের মানবাধিকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা বলতেন, প্রতিবছর দেশওয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশ করতেন, সেটাও কি এ কথা বলে যে বাংলাদেশ সেই সব দেশকে উপনিবেশ মনে করে? আর এক কথা, বিডিআর বিদ্রোহের নামে যা ঘটানো হয়েছে, তা আমাদের ইতিহাসে কলঙ্ক হয়ে থাকেব। এটি যারা ঘটিয়েছে, তাদের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের দায়ে বিচার করে শাস্তি দিতে হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যে ভঙ্গিতে কথাগুলো বলেছে, সেটার সঙ্গে আমরা একমত নই, কিন্তু বিচারের প্রক্রিয়ায় যে গুরুতরভাবে মানবাধিকারের ব্যত্যয় ঘেটেছে, সে ব্যাপারে কি কোনো কথা বলা যাবে না? আসক একটি মানবাধিকার সংগঠন হওয়ায় তাকে অনেক তথ্য গ্রহণ করতে হয়। আমাদের হাতে বেশ কিছু পুলিশ প্রতিবেদন আছে, যেখানে পুলিশ কর্তৃপক্ষ নিজেরাই লিখিতভাবে বলেছে যে অনেক জওয়ান—যাঁদের সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরবর্তী সমেয় তাঁদের রাষ্ট্রীয় হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের শরীরে গুরতর আঘাতের চিহ্ন আছে এবং তাঁদের মৃত্যু আঘাতজনিত। এঁদের মধ্যে অনেককে গুরতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে এবং সেখানে তাঁদের মৃত্যু হয়। এই জখমগুলো অথবা আঘাতের কারণ কী? অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আদালেত সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি, অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁদের আদালেত হাজির করতে হয়েছে। এঁরা সবাই সন্দেহভাজন। আমাদের আইনে কি কোনো বিধান নেই যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে কী আচরণ করা হবে?
সন্ত্রাসীরা, খুনিরা নৃশংসভাবে হত্যা, খুন, জখম, অত্যাচার করে। তার প্রত্যুত্তরে রাষ্ট্রেরও কি তাদের মতো আচরণ সমর্থনযোগ্য? আর তা সমর্থন না করলেই দেশদ্রোহী, ষড়যন্ত্রকারী? তাহলে প্রশ্ন তুলতে হয়, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কেমন ‘গণতন্ত্র’, ‘মানবাধিকার’, ‘মানবসত্তার মর্যাদার’ দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিল?
সবশেষে বলবো, এখন যাঁরা সরকারে বসে আসক অথবা টিআইবিকে গালমন্দ করছেন, তাঁরাই বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় আমাদের বাহবা দিয়েছেন। বলেছেন, খুব ভালো কাজ করছি আমরা। এখনো সরকারের অনেকেই কিন্তু যথারীতি আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে বলেন। তাঁরা জানেন যে মানবাধিকার বাঁচলে দেশ বাঁচবে, জাতি বাঁচবে।
সুলতানা কামাল: আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এবং সাবেক তত্তাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
লেখাটি গত ১৬-০৭-১২ তারিখে দৈনিকতে প্রকাশিত হয়েছিল।